নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা - খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়

আমাদের আশেপাশে অনেক নিম পাতার গাছ আছে। কিন্তু নিম পাতার গাছ থাকা সত্ত্বেও আমরা নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানি না। তাই আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করব নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা এবং খালি পেটে নিমপাতার রস খেলে কি হয়।
নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা - খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
নিম পাতা আমাদের কিডনির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই চলুন তাহলে আর দেরি না করে নিমপাতার রস খাওয়ার উপকারিতা এবং খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্র:নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা - খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়

নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম

নিম পাতার রস খাওয়ার আগে নিম পাতার রস তৈরি করতে হবে। নিম পাতার রস খাওয়া খুবই উপকারী। অনেকেই ডায়াবেটিস নিরাময়ে ত্বকের সমস্যার কারণে, পেটে সমস্যার কারণে নিম পাতার রস খান। তবে নিয়মিত নিম পাতার রস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিম পাতার রস খেয়ে যদি গ্যাসের সমস্যা হয় বমি বমি ভাব হয় তাহলে রস না খাওয়াই ভালো। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
নিম পাতার রস তৈরি করার জন্য প্রথমে পাতাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে এরপর ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে অথবা পিষে প্রয়োজন মতো পানি দিতে হবে। এরপর ভালোভাবে ছেকে নিতে হবে। নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো:
  • পানির সাথে মিশিয়ে মিশ্রণ হিসেবে খাওয়া যায়।
  • তিক্ততা কমানোর জন্য লেবু অথবা মধুর সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • সরাসরি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিমপাতার রস খাওয়া যায়।

নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা - খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়

নিম পাতায় ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। তাই নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা অনেক। হেপাটোপ্রটেক্টিভ , গ্যাস্ট্রোপ্রটেকটিভ বিশিষ্ট নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা অজস্র। আর এ নিম পাতার রস যদি খালি পেটে খাওয়া যায় তাহলে আরো ভালো।

নিম পাতা হজমের গতিশক্তি বৃদ্ধি করে। তাই খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে মানুষের হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, অন্ত্রের। গতি বাড়ে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিমপাতার রস খেলে অনেক উপকার হয়। নিম পাতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম যা হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। হবে টানা সাত দিন খালি পেটে নিমপাতার রস খেলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে: শরীরের টক্সিন দূর হয়, পায় শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি পায়, ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে চোখের উপকার হয়। দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়, চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়। ডায়াবেটিক্স, কুষ্ঠ রোগীদের জন্য খালি পেটে নিম পাতা খাওয়া অনেকটা ওষুধের মত। এটি তাদের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
নিম পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন তাই নিম পাতার রস খাওয়া ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। খালি পেটে নিমে পাতার রস খেলে লিভার ভালো থাকে। সর্বোপরি নিম পাতার রস আমাদের শরীরের জন্য যথেষ্ট উপকারী ।

নিম পাতার রস মাথায় দিলে কি হয়

নিম পাতায় রয়েছে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল আন্টি ফাঙ্গাল। এছাড়াও নিমপাতা ফাইটোকেমিক্যাল বিশিষ্ট। তাই নিম পাতা চুলের জন্য অনেক উপকারী। নিম পাতার রস মাথায় দিলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। আমাদের চুলের জন্য ভিটামিন ই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের চুল ভিটামিন ই এর অভাবে দুর্বল। নিম পাতায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই রয়েছে।

তাই নিম পাতার রস মাথায় দিলে চুল পুষ্ট হয়। চুলের দুর্বলতা কমে যায়। নিমপাতা এন্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হওয়ার কারণে মাথায় খুশকি হলে নিম পাতার রস দিলে খুশকি দূর হয়। নিম পাতার রস ব্যবহারের ফলে মাথার স্কালে পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। চুলের রুক্ষতা শুষ্কতা দূর হয়। দৃষ্ট নন্দন ও সুন্দর চুল পাওয়ার জন্য অনেকেই নিমপাতার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করেন।

নিম পাতার হেয়ার প্যাক সঠিক উপায়ে ব্যবহারের চুলের জেল্লা ফিরে আসে। শীতকালে আমাদের চুল অনেক রুক্ষ হয়ে যায়, মাথায় খুশকি সমস্যা দেখা দেয় তখন নিম পাতার রস মাথায় দিলে মাথার জন্য অনেক উপকার হয় চুল ভালো থাকে। অনেকেই চুল ঝরে পড়া চুলের রুক্ষতা ইত্যাদি সমস্যার কারণে টেনশন এ ভুগছেন।
বাহিরের কোনো পণ্য ব্যবহার করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তাহলে নিমপাতা হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট সমাধান। নিম পাতার রসের সাথে হলুদ মিশিয়ে মাথায় দিলে চুলের সৌন্দর্য ফিরে আসবে, চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং সহজে চুল ঝরে পড়বে না। অর্থাৎ নিম পাতার রস মাথায় দিলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়।

নিম পাতার রস খেলে কি সুগার লেভেল কমে

হ্যাঁ, নিম পাতার রস খেলে সুগার লেভেল কমে। নিম পাতায় রয়েছে নিমবিন , নিমবিডল, কিউরেকটিন ইত্যাদি। বর্তমানে প্রতিটি ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। ডায়াবেটিকস হয় সুগার লেভেল বেড়ে যাওয়ার কারণে। অনেকে ডায়াবেটিকস নিরাময় মিমের রস নেমে বডি নিমের গুঁড়ো এসব খেয়ে থাকেন। কারণ মিম শুয়ার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। নিম পাতায় থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান সুগার লেভেল কমিয়ে দেয়।

নিম পাতার রস খেলে কি ওজন কমে

হ্যাঁ, নিম পাতার রস খেলে ওজন কমে। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে নিমের পাতা খুবই উপকারী জিনিস হিসেবে গণ্য করা হয়। নিম পাতার বিশেষ গুণ এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। নিম পাতার রস আমাদের পাচনতন্ত্রের উন্নতি ঘটায়, কোলেস্টরেল কমিয়ে দেয়। সকালে খালি পেটে নিম পাতা খেলে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়। যার ফলে আমাদের খাবার ভালোভাবে হজম হতে পারে।

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের জন্য নিম পাতার রস খুবই উপকারী। নিয়ম অনুযায়ী নিম পাতার রস খেলে আমাদের আজব প্রক্রিয়া উন্নত হবে এবং একই সাথে আমাদের ওজন কমবে। অনেকেই শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিম পাতার রস খান। নিম পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় যার ফলে আমাদের ওজন কমে।

নিম পাতার রস প্রতিদিন খেলে কি হয়

নিম পাতার রস প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। নিম পাতার রস প্রতিদিন খেলে কিডনির ক্ষতি হয়। সপ্তাহে তিন-চার দিন নিম পাতার রস খাওয়া উত্তম। নিম পাতার রস খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। অনেক রোগ নিরাময় করা যায় নিম পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে।

ডায়াবেটিসের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে নিমপাড়া রস খাওয়ার মাধ্যমে। ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী রস খেলে মোজা প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। নেমে থাকা ভিটামিন ই এর কারণে আমাদের চুলের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন নিম পাতার রস খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা কমে যায়।
নিম পাতার রস খাওয়া আমাদের চোখের জন্য উপকারী। চোখের ভেতরে বিভিন্ন সমস্যা বা চোখের বলি রেখা নিম পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে দূর হয়। নিমপাতার রসে বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে। যেমন: ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি। যায় ফলে এটি আমাদের বিভিন্ন খনিজ উপাদানের অভাব পূরণ করে।

নিম পাতার রস মুখে দিলে কি হয়

নিম পাতায় রয়েছে আন্টি ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া। তাই এটি বিভিন্ন রোগ জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম। নিম পাতার রস মুখে দিলে ব্রণের সমস্যা পরিত্রাণ পাওয়া যায়। নিম পাতার রস মুখে দিলে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়। নিম পাতা মুখের দাগ কমাতে সাহায্য করে।

নিম পাতায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল থাকার কারণে নিমপাতার রস মুখে দিলে ব্ল্যাকহেডস দূর হয়। মুখের ছোট ছোট গর্ত পূরণ হয়। কলকাতার রস মুখে দিলে ত্বকের কোষ গুলো পুনর্জীবিত হয়। যার ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।

রূপচর্চায় নিমের জুড়ি মেলা ভার। অনেকের রূপচর্চায় নিম পাতার রস ব্যবহার করেন। নিম পাতার রস মুখে দিলেন মুখ থেকে রোদে পুড়ে যাওয়ার দাগ দূর হয়। নিমে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান আমাদের মুখের কোষগুলোর জন্য উপকারী। তাই নিম্মাতা রস মুখে দিলে আমাদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

FAQs:

প্রশ্ন: নিম পাতা সকল ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে ?
  • উওরঃ না, নিমপাতা সকল ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যাবে না। বিভিন্ন তত্ত্বে রয়েছে যার জন্য নিম পাতা ক্ষতিকর।
প্রশ্ন:কোন পদ্ধতিতে নিম পাতা খাওয়া সর্বোত্তম?
  • উওরঃ নিম পাতা খাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী নিমপাতা ভেজে খাওয়া সর্বোত্তম।
প্রশ্ন: নিম পাতার রস হাড়ের ক্ষয় রোধে খাওয়া যাবে ?
  • উওরঃ: হ্যাঁ অবশ্যই নিমপাতার রস হাড়ের ক্ষয় রোধে খাওয়া যাবে। কারণ নিম পাতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম।
প্রশ্ন: কোন পদ্ধতিতে অনেকদিন নিমপাতা সংরক্ষণ করা যাবে?
  • উওরঃ নিম পাতার শুকিয়ে গুঁড়ো করলে অনেকদিন যাবত নিম পাতা সংরক্ষণ করা যাবে। এতে নষ্ট হওয়ার বা দুর্গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
প্রশ্ন: হলুদের সাথে নিমপাতা মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করা যাবে ?
  • উত্তর: হ্যাঁ, হলুদের সাথে নিমপাতা মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করা যাবে। হলুদের সাথে নিমপাতা মিশিয়ে ব্যবহার করলে সেটি মুখের জন্য আরও বেশি উপকারী।

লেখকের শেষ কথা

আশা করি আজকে আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনি নিমপাতা সম্পর্কে সঠিক এবং ভালো ধারণা পেয়েছেন। তবে আমাদের নিমপাতা ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত। সব ধরনের শরীরে নিম পাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। আমার নিয়মিত নিমপাতার রস খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমরা সাবধানতা অবলম্বন করে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে, নিয়ম মেনে নিমপাতা ব্যবহার করব। আর্টিকেলটির শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url