এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ হিসেবে এন্টাসিড প্লাস খুবই জনপ্রিয় ওষুধ। আপনি যদি এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ জানতে চান। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজ আমি আপনাদের সামনে এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করবো।
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ জানলে আমরা বুঝতে পারবো যে ঠিক কখন আমাদের এন্টাসিড প্লাস ওষুধ সেবন করতে হবে। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন আর্টিকেল টি শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্র:এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের জন্য এন্টাসিড প্লাস খুবই জনপ্রিয় একটি ওষুধ। মূলত এন্টাসিড প্লাস নামক ঔষধ টি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড থেকে বাজারজাত করা হয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাই অনেকে এন্টাসিড প্লাস ওষুধ খান। কিন্তু এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম মেনেই এন্টাসিড প্লাস খাওয়া উচিত। কারণ ব্যক্তি ও বয়স ভেদে ভিন্ন এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার পরিমাণ কম বেশি হয়।
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো:
- এন্টাসিড প্লাস খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা বা ১ ঘন্টা পর খেতে হয়। কারণ এই সময় এন্টাসিড প্লাস এটি খুব সহজে পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
- এন্টাসিড প্লাস দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর শুধু তিনবার সেবন করা যায়। এর বেশি সেবন করা উচিত নয়।
- এন্টাসিড প্লাস ওষুধ সেবনের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
- ডাক্তারে পরামর্শ ব্যতীত দীর্ঘদিন যাবত এন্টাসিড প্লাস সেবন করা যাবে না।
এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
অম্ল ও ক্ষারের বিক্রিয়ার ফলে লবণ ও পানি উৎপন্ন হয়। আমাদের দেহে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় পেটে অম্ল অর্থাৎ এসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে। গ্যাস্টিকের সমস্যা বৃদ্ধি পেলে আমরা এন্টাসিড প্লাস ঔষধ খাই।এন্টাসিড প্লাস ওষুধটি ক্ষার জাতীয়।এন্টাসিড প্লাস এর কাজ আমাদের পেটে জমে থাকা এসিড, বুদবুদ ইত্যাদি সাথে বিক্রিয়া করে আমাদের পেটের জ্বালাপোড়া প্রশমিত করা।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত কাশি হলে কি ওষুধ খাব
এন্টাসিড প্লাস ঔষধের মূল উপাদান ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড। আমাদের পেটে জ্বালাপোড়া ব্যথা অস্বস্তি হলে এন্টাসিড প্লাস খাই। এন্টাসিড প্লাসে থাকা সিমেথিকন আমাদের পেটের বুদবুদ ভেঙে ফেলে যার ফলে আমরা তাড়াতাড়ি স্বস্তি পাই। এন্টাসিড প্লাস এর কাজ আমাদের পেটের ভিতরে থাকা অতিরিক্ত গ্যাস দূর করা। এন্টাসিড প্লাস এর কাজ হল আমাদের পেটের ph এর মান বৃদ্ধি করা।
এন্টাসিড প্লাস আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছানোর পর দ্রবীভূত হয়ে ক্যাটায়ন গুলোকে মুক্ত করে। তারপর পাকস্থলী অতিরিক্ত এসিড গেম নিরপেক্ষ করে তুলে। আমরা বুকে জ্বালাপোড়া পেট ব্যথা হজমে সমস্যা ইত্যাদি হলে এন্টাসিড প্লাস ওষুধটি খাই। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন এন্টাসিড প্লাস এর কাজ কোন গুলো।
এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড ট্যাবলেট গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমানোর জন্য খাওয়া হয়। তবে নিয়মে না খেলে সম্পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যায় না। তাই, এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জানলে আপনি সঠিক উপায়ে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে পারবেন। এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো:
- এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে না খেয়ে গিলে খেতে হবে।
- এন্টাসিড ট্যাবলেট খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা বা ১ ঘন্টা পর খেতে হয়। কারণ এই সময় এন্টাসিড প্লাস এটি খুব সহজে পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
- এন্টাসিড ট্যাবলেট দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর শুধু তিনবার সেবন করা যায়। এর বেশি সেবন করা উচিত নয়।
- এন্টাসিড ট্যাবলেট ওষুধ সেবনের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
- ডাক্তারে পরামর্শ ব্যতীত দীর্ঘদিন যাবত এন্টাসিড ট্যাবলেট সেবন করা যাবে না।
এন্টাসিড ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়?
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ জানার পর আমরা এখন জানবো এন্টাসিড ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়?অনেকেই অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট গিলে খাবে নাকি চুষে খাবে এ বিভ্রান্তিতে ভুগে। এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে খাওয়া ঠিক নয়। যেকোনো ঔষধ খাওয়ার পর এর পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পেতে হলে সঠিক নিয়মে ওষুধটি খেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়
এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে খেলে এন্টাসিড ট্যাবলেট এর পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পাওয়া যায় না। এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে খেলে এর উপাদান গুলো ভালো ভাবে শোষিত হয় না, যার ফলে পেটের জ্বালাপোড়া কমতে অনেক সময় লাগে।
এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে না খেয়ে গিলে খাওয়া ভালো। এতে ওই পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পাওয়া যায় এবং উপাদান গুলো ভালোভাবে শোষিত হয়। এন্টাসিড ট্যাবলেট গিলে ট্যাবলেটটি আমাদের পেটে পৌঁছাতে কম সময় লাগে। যার ফলে পেটের জ্বালাপোড়া দ্রুত কমে যায়।
এন্টাসিড ট্যাবলেট এর কাজ
এন্টাসিড ট্যাবলেট এর মুল উপাদান অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড ও ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড। এ উপাদান গুলো ক্ষার জাতীয়। আমাদের পেটে অম্লত্বের ঘনত্ব বেড়ে গেলে এসিডিটি হয়। তখন আমরা এন্টাসিড ট্যাবলেট খাই। এন্টাসিড ট্যাবলেট এর কাজ এন্টাসিড ট্যাবলেটের ক্ষার পেটের এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে জ্বালাপোড়া প্রশমিত করে।
আজকের আর্টিকেলে এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ এর পাশাপাশি এন্টাসিড ট্যাবলেট এর কাজ নিয়েও আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে এন্টাসিড ট্যাবলেট এর কাজ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক :
- পেটের জ্বালাপোড়া প্রশমিত করে
- অতিরিক্ত গ্যাস থেকে বের হতে সহায়তা করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- বমি বমি ভাব দূর করে
- বদহজম রোধ করে
- পেপটিক আলসার প্রতিরোধ কর
- এসিডিটির কারণে সৃষ্ট পেট ব্যথা নিরাময় করে।
এন্টাসিড প্লাস কেন খাবেন?
ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, সিমেথিকন এর সমন্বয়ে এন্টাসিড প্লাস তৈরি হয়। এন্টাসিড প্লাস কেন খাবেন? এই প্রশ্নের উত্তর হবে পেটে মূলত এসিডিটির সমস্যা দেখা দিলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন। এছাড়াও এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার আরও কারণ আছে।
আরো পড়ুনঃ গোসলের সময় কানে পানি গেলে করণীয়
মানুষ তাদের সমস্যা অনুযায়ী ঔষধ খাই। অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে এন্টাসিড প্লাস খান। এন্টাসিড প্লাস কেন খাবেন এই বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
- এসিডিটির সমস্যা দেখা দিলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন
- বুকে জ্বালাপোড়া করলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন
- বমি বমি ভাব হলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন
- বদহজম হলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন
- আলসারের সমস্যা হলে এন্টাসিড প্লাস খাবেন
এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়?
অনেকেই বুঝতে পারেন না যে এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়? পেটে যখন অম্বল হয় তখন এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে হয়। অনেক সময় বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের এসিডিটির সমস্যা দেখা দেয় সমস্যা দেখা দেয়। তখন আমরা এন্টাসিড ট্যাবলেট খাই।
বমি বমি ভাব হলে, পেট বা বুক জ্বালাপোড়া করলে, হজমে সমস্যা হলে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে হয়। এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়? জানলে আপনি সঠিক নিয়মে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে পারবেন। খাবার খাওয়ার এক থেকে দুই ঘন্টা পর এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে হয়। তাহলে এন্টাসিড ট্যাবলেটের পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পাওয়া যায়।
(FAQs) এন্টাসিড সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্নঃ
প্রশ্ন: এন্টাসিড ওষুধের মূল উপাদান কোন গুলো?
- এন্টাসিড ওষুধের মূল উপাদান ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড, অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড, সোডিয়াম বাই কার্বনেট।
প্রশ্ন: কোন কোম্পানির এন্টাসিড ওষুধ সবচেয়ে ভালো?
- স্কয়ার কোম্পানির এন্টাসিড ওষুধ সবচেয়ে জনপ্রিয়। নির্দিষ্ট ভাবে বলা মুশকিল কোন কোম্পানির এন্টাসিড ওষুধ সবচেয়ে ভালো।
প্রশ্ন: এন্টাসিড সাসপেনশন কিভাবে তৈরি করতে হয়?
- এন্টাসিড সাসপেনশন গরম পানির সাথে মিশিয়ে তৈরি করতে হয়।
প্রশ্ন: দিনে কয়বার এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা যায়?
- দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনবার এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা যায়
প্রশ্ন: অল্প গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে কত পাওয়ারের এন্টাসিড ওষুধ খাওয়া যাবে?
- আপনার অল্প গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে আপনি ২০ mg এন্টাসিড খেতে পারেন।
শেষ কথাঃ এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ
আজকে আমরা এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ ও এন্টাসিড ওষুধ এর যাবতীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের জন্য এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া হয়। এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম - এন্টাসিড প্লাস এর কাজ জানার ফলে আমরা এই ওষুধ সেবনের সময় সতর্ক থাকবো।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url