ঈদের দিন সকালের সুন্নত - ঈদুল ফিতরের আমল
প্রিয় পাঠক আপনি কি ঈদের দিন সকালের সুন্নত এবং ঈদুল ফিতরের আমল ও ঈদুল ফিতরের
সুন্নত কয়টি এ বিষয় সম্পর্কে জানতে অনলাইনে সার্চ করে তথ্য খুঁজাখুজি
করছেন তাহলে আর চিন্তা কিসের আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আপনি জানতে পারবেন ঈদের দিন
সকালের সুন্নত এবং ঈদুল ফিতরের আমল সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।
মুসলমানদের দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব কি, এ বিষয় সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি।ঈদুল
ফিতর ও ঈদুল আযহা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব।মুসলমানরা এই দুইটি
উৎসব কেন্দ্র করে নানান রকম আয়োজন করে থাকে।তাই আমাদের আজকের আর্জেন্টিনার মূল
আলোচনার বিষয় থেকে আপনাদের জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব ঈদের দিন সকালের সুন্নত ও
ঈদুল ফিতরের আমল সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃঈদের দিন সকালের সুন্নত।ঈদুল ফিতরের আমল
ভূমিকা।ঈদের দিন সকালের সুন্নত।ঈদুল ফিতরের সুন্নত কয়টি
ঈদের দিন সকালের বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে এবং ঈদের দিনে আমল করার মত অনেক আমল
রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।প্রিয় পাঠক
আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় যা আজকের আর্টিকেলের ভিতরে আমরা
আলোচনা করতে চলেছি ঈদের দিন সকালের সুন্নত ঈদুল ফিতরের আমল সম্পর্কে যাবতীয় সকল
তথ্য।
আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতর নামাজ পড়ার নিয়ম
সেই সাথে আপনাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা সাজিয়েছি ঈদের দিনের
মুস্তাহাব আমল কোনটি, ইসলামিক উৎসবের গুরুত্ব,ঈদুল ফিতরের সুন্নত
কয়টি,মুসলমানদের দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব কি, ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি
তা জানতে পারবেন।ঈদ হল ইসলামে সবচেয়ে বড় দুইটি উৎসব ও মুসলমানদের জন্য আনন্দর
দুইটি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা।তাই আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে জানবো ঈদের দিন
সকালের সুন্নত এবং ঈদুল ফিতরের আমল সম্পর্কে।
মুসলমানদের দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব কি
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব রয়েছে দুইটি মুসলমানদের হৃদয়ের দিনের র দুইটি প্রধান
ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি ঈদুল আযহা যাকে কোরবানির
ঈদ বলা হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরা সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে বিবেচনা করে ঈদুল
ফিতরকে এবং এক কথায় বলা হয় সবার কাছে ঈদ বলে পরিচিত। এই ঈদুল ফিতর।
ঈদ ইসলামে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও এই ধর্মের আবির্ভাবের সাথে সাথে কিন্তু
ঈদের প্রচলন শুরু হয়নি। ঈদুল আযহা কখন আর কোন প্রেক্ষাপটে চালাবো হয়েছিল তা
ইতিহাস থেকে জানা যায় কিন্তু ঈদুল ফিতর কখন কিভাবে প্রচলিত হয়েছিল সেই সম্পর্কে
তেমন তথ্য জানা যায়নি ।
ঈদুল ফিতর: আরবি ঈদ শব্দ মানে খুশি আনন্দ বা উৎসব মুসলমানদের জন্য ঈদ পালন
ওয়াজিব। অর্থাৎ অবশ্যই পালনীয় ঈদ পালনের কিছু নিয়ম ইসলামে নির্দিষ্ট করা
হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ঈদের দিন সকালে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা যা সব
মুসলমানের জন্য অবশ্যই পালনীয় এছাড়া ঈদুল ফিতরের ফিতরা প্রদান করার একটি অবশ্য
পালনীয় রীতি ফেতরা ঈদের নামাজের আগে অসহায় গরীব দুঃখীদের দিতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ওযু ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করা যাবে কি
ঈদুল ফিতরের আগে একমাস সিয়াম সাধনা পালন করতে হয় তারপরেই কিন্তু ঈদুল ফিতর পালন
করা হয়। নবী মুহাম্মদ ঈদের দিন গোসল করে উত্তম প্রসাদ পড়ে নামাজ পড়তে যেতেন।
ঈদের নামাজের পর মিষ্টি দ্রব্য খাওয়া এবং আত্মীয় পরিজন প্রতিবেশী বন্ধুদের সাথে
শুভেচ্ছা বিনিময় করার রেওয়াজ রয়েছে।
ঈদুল আযহা: এই ঈদুল আযহা উদযাপন শুরু হয় গরু খাসি উট বিভিন্ন রকমের
প্রাণী কে কোরবানি করার মাধ্যমে। ঈদের নামাজের পর পর সু কুরবানীর মধ্যে দিয়ে
শুরু হয় ঈদুল আযহা পালন। মহান আল্লাহর প্রতি প্রিয় বান্দা হজরত ইব্রাহিম (আ.)
সীমাহীন ভক্তি সর্বোচ্চ ত্যাগের সদিচ্ছা এবং গভীরতম আত্মসমর্পণে পরম করুনাময়
সন্তুষ্ট হন এবং তিনি ইব্রাহিমকে (আ.) আত্মত্যাগ ও ভালোবাসার নিদর্শন সর্ব পশু
কুরবানী করা নির্দেশে।
এই ঘটনার পর থেকে মুসলমানরা তাদের সমর্থ্য অনুযায়ী ত্যাগ ও আত্মত্যাগের প্রতীক
হিসেবে পশু কোরবানি দিয়েছে প্রতিবছর মুসলমানরা বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের
পবিত্র হজ্জের পরই দেওয়া হয় কোরবানি পাঁচ দিন ধরে চলে হজের আনুষ্ঠানিকতা। জিলহজ
মাসের ১০ তারিখে পালন করা হয় মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা।
ঈদের দিন সকালের সুন্নত
ঈদুল ফিতর ইসলাম ধর্ম আবার হামভিদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব এই দিনে এক মাস সিয়াম
সাধনার পরে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয় তবে ঈদের দিন সকালে কিছু সুন্নত রয়েছে
যেগুলো পালন করা আমাদের জন্য অবশ্যক। ঈদের দিন সকালের সুন্নত রয়েছে অনেকগুলো যার
মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যেগুলো বেশি করতেন চলুন জেনে নেওয়া যায়। ঈদের
দিন সকালের সুন্নত সমূহ নিচে দেওয়া হল :
- ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠা
- মিসওয়াক করা
- গোসল করা
- শরীয়ত সম্মত সাজ সজ্জা করা।
- সামর্থ্য অনুপাতে উত্তম পোশাক পরিধান করা।
- সুগন্ধি ব্যবহার করা।
- ঈদুল ফিতরের যাবার আগে মিষ্টি জাতীয় যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া।
- সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া
- ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করা।
- ঈদের নামাজের দেহে আদায় করা বিনা অপরাগতায় মসজিদে আদায় না করা।
- যে রাস্তা দিয়ে ঈদ হয়ে যাবে সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা।
- পায়ে হেঁটে যাওয়া।
- ঈদুল ফিতরের ঈদে যাবার সময় আস্তে আস্তে তাকবির পড়তে থাকা।
উপরোক্ত সকল সুন্নাহ সমূহ আমাদের নবী (সাঃ) পালন করতেন এই জন্য আপনারা যদি ঈদের
দিন সকালের সুন্নত পালন করতে চান তাহলে এই সুন্নত গুলো পালন করতে পারেন।আশা করি
আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
ঈদুল ফিতরের আমল
আমরা অনেকেই ঈদুল ফিতরের আমল সম্পর্কে জানি না যারা ঈদুল ফিতরের আমল গুলো এবং ঈদুল
ফিতরের দিন কোন আমল পালন করতে হয় সে সম্পর্কে জানা নেই।তাদের জন্য আজকে আমরা
নিয়ে হাজির হয়েছে ঈদুল ফিতরের আমল। মুসলিম উম্মাদের জন্য আনন্দের দিন হল ঈদুল
ফিতর বছরের দুটি দিন ঈদ হিসেবে পাই মুসলমান রাজা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য
ধর্মীয় প্রধান এবং বড় উৎসব ঈদুল ফিতর।
আরো পড়ুনঃ সাদামাটা জীবন নিয়ে ইসলামিক উক্তি
এর একটি ঈদুল ফিতরের মধ্যে অন্যতম যেই দ্বীন ঈদুল ফিতর পালন করা হবে সেই দিনের
কিছু আমল রয়েছে যা প্রতিটি মুসলিমদের পালন করা দরকার। ঈদ শুধু মাত্র একটি খুশী
বা আনন্দের দিন না ঈদের একটি ইবাদতের নাম এই দিনটি আমলের জন্য একটি বিরাট
নেয়ামতের দিনও বিশেষ কিছু ইবাদত বা আমল রয়েছে যেগুলো অনেক পূর্ণ লাভ করা যায়।
আমাদের নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত
জেগে ইবাদত করবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। ঈদুল ফিতরের রাত, ঈদুল
আযহার রাত, আরাফাতের রাতে, জিলহজের রাত, মধ্য সাবানের রাত। সুতরাং ঈদুল ফিতরের
রাতে ইবাদত করা খুবই কাজে এবার আমরা জেনে নিবো ঈদের দিন আমাদের কি কি করনীয় আমল
রয়েছে।
- ঈদগাহে যাওয়ার আগে উত্তম রূপে গোসল করা।
- হালকা নাস্তা করে ঈদগাহে যাওয়া হাদিসে খেজুর বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
- আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন উত্তম পোশাক পরিধান করা। নতুন পোশাক পরিধান করতে হবে এমন কোন কথা নেই।
- ঈদগাহে যাবার আগে সাদকাতুল ফিতর আদায় করা।
- হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া তবে হেঁটে যাওয়া সম্ভব না হলে বাহনে চড়ে ঈদগাহে যাওয়া যাবে।
- এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাবে এবং অন্য রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ হাঁটা এবং বেশি মানুষের সঙ্গে মেশার উপকারিতা পাবেন।
তাকবীর বলতে বলতে ঈদগাহে যাওয়া তাকবীর বলতে হবে এভাবে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু
আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদুলিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও
ওয়া আসিলা।
একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা প্রতিটি জাতি তাদের নিজ নিজ ভাষায়
শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারবে সাহাবায়ে কেরাম, ' তাক্বাব্বালুল্লাহা মিন্না ওয়া
মিনকুম' (আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে কবুল করুন) এ জাতীয় বাক্য দ্বারা ঈদের শুভেচ্ছা
বিনিময় করতেন।
- খুতবা সোনা ও দোয়া করা ঈদের নামাজের পরে ইমাম সাহেব খুতবা প্রদান করবেন এবং মুসল্লিরা তা মনোযোগ দিয়ে শ্রাবণ করবেন এটি পালন করা ওয়াজিব।
- এ দিনে পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন গরিব অসহায় নির্বিশেষে সবার সঙ্গে মিশা সবার খোঁজ-খবর নেওয়া সাধ্যমত তাদের বাসা বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানানো।
- আল্লাহতালা আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন
ঈদুল ফিতরের সুন্নত কয়টি
ঈদুল ফিতরের সুন্নত কয়টি এই সম্পর্কে অনেকেরই পর্যাপ্ত পরিমাণে ধারণা নেই আমরা
অনেকেই জানতে চাই যে ঈদুল ফিতরের সুন্নত কয়টি সে সম্পর্কে আসলে ঈদুল ফিতর মানে
উৎসব আনন্দের দিন কিন্তু এই ঈদুল ফিতরের দিনেও কিন্তু ইবাদতের দিনে এই দিন আমাদের
ঈদুল ফিতরের যে কয়টি সুন্নত রয়েছে নবীজির সবগুলোই পালন করা অবশ্যক।
আরো পড়ুনঃ মনের অশান্তি দূর করার ১২ টি উপায়
ঈদের দিনে রয়েছে ১৩ যা আমাদের নবী রাসুল সাঃ পালন করতেন এবং এই ১৩ টি সুন্নত
পালন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত আবশ্যক। ঈদুল ফিতরের দিন এই সুন্নত গুলো পালন করে
আমরা অনেক সওয়াব লাভ করতে পারি।ফিকহাদের দৃষ্টিকোণ থেকে সুন্নত হলো এমন এক আমল
যার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমল করেছেন এবং তার প্রতি উৎসাহিত
করেছেন কিন্তু তা ফরজ বা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কোন দলিল পাওয়া যায় না।
- সুন্নতের দুটি স্তর রয়েছে।
- সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে ছাড়া ঠিক নয় কিন্তু কেউ ছাড়লে তাকে গুনাহগার করা যাবে না।
- সুন্নতে গায়রে মুআক্কাদাহ বা কম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত বা সুন্নতে যায়েদাহ (অতিরিক্ত সুন্নত)।
- নিজেই ঈদুল ফিতরের ১৩ টি সুন্দর দেওয়া হল যা নবীজি (সাঃ) পালন করতেন।
- ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠা
- মিসওয়াক করা
- গোসল করা
- শরীয়ত সম্মত সাজ সজ্জা করা।
- সামর্থ্য অনুপাতে উত্তম পোশাক পরিধান করা।
- সুগন্ধি ব্যবহার করা।
- ঈদুল ফিতরের যাবার আগে মিষ্টি জাতীয় যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া।
- সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া
- ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করা।
- ঈদের নামাজের দেহে আদায় করা বিনা অপরাগতায় মসজিদে আদায় না করা।
- যে রাস্তা দিয়ে ঈদ হয়ে যাবে সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা।
- পায়ে হেঁটে যাওয়া।
- ঈদুল ফিতরের ঈদে যাবার সময় আস্তে আস্তে তাকবির পড়তে থাকা।
উপরোক্ত সকল সুন্নাহ সমূহ আমাদের নবী সাঃ পালন করতেন এই জন্য আপনারা যদি ঈদের দিন
সকালে সুন্নত পালন করতে চান তাহলে এই সুন্নত গুলো পালন করতে পারেন আশা করি
আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
ইসলামিক উৎসবের গুরুত্ব
মুসলমানদের জাতীয় সংস্কৃতিক চেতনার প্রধান উৎসবে কিন্তু ঈদুল ফিতর যারা দীর্ঘ এক
মাস সিয়াম সাধনা করার মাধ্যমে ঈদুল ফিতর পালন করার জন্য অতি আগ্রহী হয়ে থাকে
তাদের জন্য এই উৎসবটি অনেক আনন্দের হয়। যারা দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনা আল্লাহ
তায়ালার হুকুম পালনের নিম্ন কে কষ্ট স্বীকার করে তাকওয়া বা আত্মসংযনশীলতা
অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
মূলত তাদের জন্য ঈদ হয়ে ওঠে আনন্দ খুশি এবং ভালোবাসার উৎসব। মুসলমানরা ঈদ উৎসবের
মধ্যে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ উপস্থাপন করে। ঈদুল ফিতরের মাধ্যমে
তাকওয়া অর্জন এবং ঈদুল আযহার মাধ্যমে ত্যাগের প্রশিক্ষণ পায়। ঈদ উৎসবকে একদিকে
যেমন ইবাদত নামক আনুষ্ঠানিকতার করা শাসনের অষ্টপৃষ্ঠে বাধা হয়নি।
আরো পড়ুনঃ জুমার দিনের ৫টি আমল
তেমনি একেবারে ইবাদতের শৃঙ্খলা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার ও সুযোগ দেওয়া হয়নি। ঈদের
তাকবির নামাজ খুতবা ও অন্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে যে সহজবদ্ধতা আছে তেমনি আছে
সুসংবদ্ধতার মহান শিক্ষা। এর মধ্যে সকল শ্রেণীর মানুষকে উন্মুক্ত ময়দানে সমবেত
করে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
জাতীয় ঐক্য ও সংহতি দেশ প্রেম মানবতা বোধ জাগানো অভিজাত্যের মিথ্যা অহংকার এবং
সামাজিক ব্যবধানে কুঠারাঘাত করে। মানুষে মানুষে ব্যবধান কমানো সর্বপরি সকল
মুসলমান ভাই ভাই এই মহান মন্ত্রে উদযাপিত করে ঈদ উৎসবের নানাবিদ কর্মসূচি। ঈদ
একটি ইবাদত আনন্দ ও ফুর্তি করার মাধ্যমে যে ইবাদত পালন করা যায়। ঈদ তার মধ্যে
অন্যতম উদাহরণ।
শরীয়ত সম্মতভাবে আনন্দ প্রকাশ করার বিষয়ে কোরআন ও করিমে বলা হয়েছে, 'বলো এটা
আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত। সুতরাং এ নিয়ে যেন তারা খুশি হয় এটির যা তারা জমা করে
তা থেকে উত্তম। (সুরা ইউনুস :৫৮)
ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি
আপনারা কি ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে জানেন যারা ঈদুল ফিতরের
ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে জানেনা তাদের জন্য আজকে আমরা নিয়ে হাজির
হয়েছে ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।ঈদুল
ফিতরের দিন দুইটি কাজ করা ওয়াজিব। ফিতরা দেওয়া এবং দুই রাকাত সালাত ছয়
তাকবীরের সাথে আদায় করা।
আরো পড়ুনঃ ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও সময়
ঈদুল ফিতরের দিন ১৩ টি কাজ করা সুন্নত এবং ওয়াজিব দুইটি কাজ করা। এই জন্য যারা
ঈদুল ফিতরের ওয়াজিব কাজ সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য জেনে রাখা দরকার যে ঈদুল
ফিতরের দিন কিন্তু ফিতরা দেওয়া সবচেয়ে বড় ওয়াজিব কাজ।ফিতরা দেওয়ার পরেই
কিন্তু আপনি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে পারেন এবং আপনি দুই রাকাত সালাত আদায়
করতে হবে ঈদের নামাজ।
ঈদুল ফিতর সালাদ আদায়:ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব
নামাজ ৬ তাকবীরের সঙ্গে আদায় করছি এরকম নিয়ত করে আল্লাহু আকবার বলে হাত তুলে
তাহারিমা বাঁধবেন তারপর সানা পড়ে পুরোটা পড়বেন। এরপর আউজুবিল্লাহ এবং
বিসমিল্লাহ আগে তিনবার আল্লাহু আকবার বললে তাকবির বলবেন প্রথম দুইবার কান পর্যন্ত
হাত উঠিয়ে ছেড়ে দিবেন।
কিন্তু তৃতীয়বার বলে হাত বেঁধে নিবেন প্রত্যেক তাকবীরের পর তিনবার সুবহানাল্লাহ
বলা যায় পরিমাণ থামবে। তারপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরায়ে ফাতেহার
পরে একটি সূরা মিলাবেন এরপর রুকু সিজদাহ করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন।
এবার অন্যান্য নামাজের মত বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতেহা পড়ে।
আরো পড়ুনঃ সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ সম্পর্কে জানুন
আরেকটি সূরা মিলাবেন এরপর ৩ বার আল্লাহু আকবার বলার মাধ্যমে তিনটা তাকবীর
সম্পূর্ণ করবেন এখানে প্রতি তাকবীরের পর হাত ছেড়ে দেবেন এবং চতুর্থ বার আল্লাহু
আকবার বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যাবেন। এরপর সেজদা এবং আখেরি বৈঠক করে যথারীতি
সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন ।
ফিতরা দেওয়া: ঈদের দিন সকল গরিব দুঃখীদের কে ফিতরা দেওয়া এবং দান সদকা
করা কিন্তু একটি ওয়াজিব কাজ আপনার ওপর যদি ফেতরাবাজিব হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই
আপনাকে ফিতরা দিতে হবে। যে সকল ব্যক্তিদের ওপর ফিতরা ওয়াজিব হয়েছে প্রতিটি
ব্যক্তিকে তার পরিবার সংখ্যা অনুযায়ী নির্ধারণ করা ফিতরা দিতে হবে।
ঈদের দিনের মুস্তাহাব আমল কোনটি
আপনারা অনেকেই ঈদের দিনের মধ্যে হবে আমল সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন যারা ঈদের দিনের
মোস্তাহাব আমলসমূহ পালন করতে চান তাদের জন্য আজকে আমরা নিয়ে হাজির হয়েছি ঈদের
দিনের মুস্তাহাব আমল কোনটি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।মুসলমানদের ধর্মীয় বড়
উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতর অন্যতম। যে দিনে মুসলমানরা পালন করে থাকে তাদের অন্যতম
ধর্মীয় উৎসব যে সময় সকলের মনে আনন্দ ও উৎসাহ সাথে পালন করে।
আরো পড়ুনঃ জুমার দিনের ১৫ টি আমল
মুস্তাহাব অর্থ উত্তম পছন্দনীয় যে আমলগুলো করলে সোয়াব রয়েছে কিন্তু না করলে
গুনাহ নেই। অনেক আলেমদের মতে, মুস্তাহাব, নফল, সুন্নত, মানদুব সব একই অর্থবোধক।
তাদের মতে ফরজ বা ওয়াজিব ছাড়া যা আছে সবই নফলের অন্তর্ভুক্ত নফলের মধ্যে কোনটি
সুন্নত কোনটা মুস্তাহাব হবে। এই জন্য ঈদের দিনে কিছু আমল রয়েছে ঈদের দিনের
পালনীয় কিছু সুন্নত মুস্তাহাব আমলের মধ্যে মুস্তাহাব আমল গুলো নিচে তুলে ধরা হলো
:
- ভরে ওঠে নিজ এলাকার মসজিদে ফরজ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে। দৈহিক ও মানসিকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
- মেসওয়াক করা, ভালোভাবে গোসল করা।
- সুগন্ধি ব্যবহার করা।
- সামর্থ্য অনুযায়ী সুন্দর পবিত্র উত্তম পোশাক পরিধান করা।
- সাদকাতুল ফিতর যার ওপর ওয়াজিব তা ঈদের নামাজের পূর্বে আদায় করা।
- ঈদগাহে দ্রুত আগে যাওয়া।
- আমার তো অনুযায়ী দান খায়রাত করা।
- ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে কিছু খাওয়া এবং ঈদুল আযহার কোরবানির পর খাওয়া।
- হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া।
- ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে আসা।
- ধীর স্থির ভাবে ঈদগাহে যাওয়া।
ঈদুল ফিতরের যাওয়ার সময় নির শব্দে এই তাকবির পড়া :আল্লাহু আকবার, আল্লাহু
আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
ঈদুল আযহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় এই তাকবিরটি উচ্চস্বরে পড়া মুস্তাহাব।
চলতে ফিরতে ' তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম' এই বাক্য বলে অপন মুসলিমকে
অভ্যর্থনা জানাবে।
কোরবানির ঈদের দিন যে লোক নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী করবে তার জন্য ঈদের নামাজও
কোরবানি পর্যন্ত জবেহ করার পর নৌকলম কাটা মুছতে হবে এতে করে হাজীদের সঙ্গে তার
সমঞ্জস্য ঘটে।
শেষ কথা।ঈদের দিন সকালের সুন্নত।ঈদের দিনের মুস্তাহাব আমল কোনটি
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ
পড়ে ইতিমধ্যে জানতেও বুঝতে পেরেছেন ঈদের দিন সকালের সুন্নত ও ঈদুল ফিতরের আমল
সম্পর্কে।এছাড়াও আপনি আমাদের আর্টিকেল সম্পন্ন পড়ে ঈদুল ফিতরের সম্পর্কিত কিছু
গুরুত্বপূর্ণ টপিক সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ শবে কদর ২০২৪ কত তারিখে
আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।এছাড়াও আপনি যদি নিত্য নতুন আপডেট আর্টিকেল
পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েব সাইটে ঘুরে আসবেন এবং ভিজিট করে রাখুন।আমাদের আজকের
আর্টিকেলে পর্যন্ত আবার কথা হবে অনুকূল টপিক নিয়ে সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url