সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ - সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম
রমজানের প্রতিটি আমল যেমন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ তার পাশাপাশি রমজানে
দান, সদকা, যাকাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ।তাইতো আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে
চেয়েছেন সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ এবং সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম
সম্পর্কে।তাইতো আজকে আর্টিকেলের ভিতরে আপনারা জানতে পারবেন সদাকাতুল ফিতরের
পরিমাণ ২০২৪ এবং সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।
একই সাথে আজকের আর্টিকেলের ভিতরে আমরা আলোচনা করতে চলেছি ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
মাসিক আল কাউসার এবং ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে ও সদাকাতুল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব
সম্পর্কিত তথ্য।তাই আজকের আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন
সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ এবং সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃসদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪।সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম।
ভূমিকা। সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪।সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম
পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর আদায়ের মাঝে আমাদের অনেক বড় একটি দায়িত্ব
রয়েছে তা হলো সদাকাতুল ফিতর আদায় করা।বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ফিতরা আদায় এর মূল্য
ধার্য সম্পূর্ণ করা হয়েছে।আপনারা অনেকেই হয়তো বা সংবাদ বা যেকোনো নেটওয়ার্ক
মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ
জুমার দিনের ১৫ টি আমল
কিন্তু আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা যা জানতে পারবেন তা হল ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক
সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম ও সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ নতুন নিয়ম
সম্পর্কে।তাইতো আপনারা অনেকেই অনলাইনে সার্চ করে ইতিমধ্যে তথ্য খোঁজাখুঁজি করছেন
কিন্তু এখনো সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না।
তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ ও
সদাকাতুল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব , ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে, সদাকাতুল ফিতর আদায়
করা কি ওয়াজিব এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে।তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
আসসালামি আলাইকুম, আপনারা কি জানেন ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে? বিদ্রো একটি দান চাই
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রোজাদার অভাবীদের এটি দেওয়া হয়ে থাকে ফিতরা আদায় করার উত্তম
সময় হচ্ছে ঈদের নামাজ বের হওয়ার পূর্ব কেমনে অর্থাৎ ফিতরা দিয়ে নামাজ পড়তে
যাওয়া। ইসলামে শরীয়ত অনুযায়ী সমর্থ্যবানদের অনুযায়ী আটা, খেজুর, গম, কিসমিস,
পনির ও যবের যেকোনো একটি পণ্যের।
আরো পড়ুনঃ
শবে কদর ২০২৪ কত তারিখে
নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ের বাজার মূল্যের ভেতরে হিসেবে গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা
যায়।তবে এসব পণ্য গরিবদের তেমন কোন উপকারে আসে না তাই এসব পণ্যের সময় মূল্য
টাকা দিলেও প্রকৃত হবে অসহায় মানুষ তাতে গরীব অসহায় মানুষদের নগদ অর্থের
প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি কেটে যাবে।
কোন দিনে আসি কাকে কাকে ভেতরে ভেতরে দেওয়া যাবে।
- ফকির: ফকিরদের বলতে আপনি প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন এমন সম্পদ বা উপযোগী হালাল উপার্জন না থাকা ব্যক্তিদের বলা হয় তারা জীবন ধারণের জন্য অপরের উপর নির্ভরশীল।
- ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: যে ব্যক্তি ঋণে জর্জরিত যার ঋণ পরিশোধের কোন অবস্থান নেই এমন ব্যক্তিকে যাকাতের ফার্ম থেকে সাহায্য করা যায়।
- মিসকিনঃ কোন ব্যক্তির কাছে থাকা সম্পদ দিয়ে তার ওপর নির্ভরশীল লোকদের প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট না হলে তাকে মিসকিন বলা হয়।
- দাস মুক্তি: যে ক্রেতা দাস বা মুক্তি লাভের জন্য অর্ধ দেওয়ার নিয়ম বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কিংবা কোন মুসলিম যুদ্ধবন্দী ও এই খাতে আওতায় পড়বে।
- যাকাত উঠানো নিয়োজিত ব্যক্তি: যে ব্যক্তি যাকাত উঠাবে সংরক্ষণ করবে পাহারা দিবে লেখক হিসাবে রক্ষক এবং বন্টনকারী সবাইকে যাকাতের প্রাণ থেকে বেতন দিতে হবে তবে তাকে মুসলিম হতে হবে পূর্ণবয়স্ক অসুস্থ বিবেক সম্পূর্ণ হতে হবে।
- আল্লাহর পথে খরচ : আল্লাহর পথে বলতে আকিদা বিশ্বাস ও কাজের দিক দিয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্টি পর্যন্ত পৌঁছে দেয় যে পথ।
- মুসাফির ব্যক্তি: যার আবাসস্থল সম্পদ আছে এমন কোন যদি সফরে গিয়ে বিপদগ্রস্ত ও নিঃস্ব হয়ে যায় তবে তাকে যা পেতে তহবিল থেকে সাহায্য করতে পারবেন।
- চিত্ত আকর্ষণ করার প্রয়োজন: যাদের মন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করার প্রয়োজন কিংবা ইসলামের ওপর তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য লোকদের যাকাতের খারাপ দেওয়া যাবে ইমাম জহুরির মতে যে ইহুদি বা খ্রিস্টান ইসলাম কবুল করবেন সেই এর মধ্যে গণ্য, সে যদি ধনী হয় তবুও।
উপরোক্ত এই মানুষগুলোকে আপনি যাকাতের টাকা বা সাদিকা দিতে পারবেন। সাহাবী ইবনে
ওমর (রা:) বলেন,' রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সদাকাতুল ফিতর অপরিহার্য করেছেন এর
পরিমাণ হলো এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড় স্বাধীন পরদিন সবার উপরে এটি
ওয়াজিব। (বুখারী হাদিস: ১৫১২ ) এবারে আমরা জানবো নিচের অনুচ্ছেদ থেকে সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ নতুন নিয়ম সম্পর্কে।
সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪
ঈদের দিনের পূর্বে সাদকায়ে ফিতর দেওয়া জায়েজ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামানায় সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিনের আগে সদাকাতুল ফিতর আদায় করে দিতেন। (আল বাহরুর রায়েক, ২/২৫১)যেসব মুসলমানদের ওপর সদাকাতুল ফিতরের সম্পদ রয়েছে বা জায়েজ হয়েছে তাদের সকলকে এই সম পরিমাণের যা হয় তার ওপর যাকাত দেওয়া ওয়াজিব।
তাহলে তার ওপর ঈদের দিন সদাকাতুল ফিতর দেওয়া ওয়াজিব হবে। এই সম্পদ ব্যবসায়ীর হোক কিংবা না হোক না এক বছর অতিবাহিত হোক বা না হোক শরীয়তের বিধান অনুযায়ী এই সাদিকাকে ফিতর বলা হয়। সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ কত সে সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান কত পরিমাণে দিতে হবে।সদকা ফিতরের পরিমাণ হচ্ছে আটা গম বা গমের ছাতু হলে অর্ধ সা। (নুরুল ইযাহ: ৩৯৫)
আরো পড়ুনঃ কত ভরি স্বর্ণ থাকলে যাকাত দিতে হয়
অর্থাৎ আটা গম বা গমের ছাতু বর্তমানে প্রচলিত মাপে এক কেজি 635 গ্রামের সামান্য বেশি অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য দিতে হবে তবে আদায়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কিছু বেশি দেওয়া উত্তম খেজুর অথবা কিসমিস দিলে গম দিলে দ্বিগুণ তথা তিন কেজি ২৭০ গ্রামের সামান্য বেশি বা তার সমপরিমাণ মূল্য দিবে।( বেহেশতী জেওর:২/২৩০)
আবার কেউ যদি এসব খাদ্য সামগ্রী ছাড়া অন্য কিছু যেমন চাল, ডাল ইত্যাদি দিতে চাইলে হিসেব করে খেজুর গম জব কিসমিস ইত্যাদি সমপরিমাণ মূল্য আদায় করতে হবে এক্ষেত্রে গমের উপর অনুমান করে তার সমপরিমাণ চাল দিলে তা জায়েজ হবে না কেননা ফিফা এর কিতাবে বলা হয়েছে হাদিসের যেসব জিনিস দেওয়ার কথা সরাসরি উল্লেখ করেছে এইসবের মূল্যই কিন্তু দিতে হবে।
- ফিকহাবিদগণ বলেন, ' গম প্রভৃতির মূল্য দেওয়াই উত্তম আর যেসব জিনিস দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে তার মূল্য দেওয়াই উত্তম। (ফাতওয়া আলমগীরী: ১/১৯২)
- একজনের ফিতরা একজন অথবা একাধিক মিসকিনের মধ্যে বন্টন করে দিতে পারবে। (মারাকরউল ফালাহ:৫৯৬)
ঈদের সালাত আদায় করারা আগে বা ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদাকাতুল ফিতর আদায় করো সর্বোত্তম। কারণ আমাদের মধ্যে ধনী গরিবের মাঝে আনন্দের ভাগাভাগি হয় তাছাড়া এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত।
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব মাসিক আল কাউসার
আপনারা ফিতরা কার ওপর ওয়াজিব মাসিক আল কাউসার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন সদাকাতুল
ফিতরার পরিমাণ সম্পর্কে তো এই প্রতিবেদনটি আপনাদের জন্য আজকে আমরা তৈরি করেছি।
সদাকাতুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ আদায় করতে হয় এটি যাকাতেরই
একটি প্রকার যার দিকে সূরাতুল আলায় (৪-১৫) ইশারা করা হয়েছে,
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস ও সুন্নাহ হয় তা
আদায়ের তাকদির করেছেন এবং এর নিয়ম নীতি শিক্ষা দিয়েছেন। 'এই কারণে নবী যুগ
থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ ইসলামের ৫ রোকন ও দ্বীনের অন্যান্য মৌলিক আমল ও
ইবাদতের মত সদাকাতুল ফিতর নিয়মিত আদায় করে আসছে। আমাদের অঞ্চলে এটি ফিতরা
হিসেবে পরিচিত।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন অর্থহীন অশালীন কথা ও কাজে রোজার
যে ক্ষতি তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকদের আহার যোগানের জন্য। (সুনানে আবু দাউদ
১/২২৭)
আরো পড়ুনঃ
আজকে আরবি মাসের কত তারিখ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র সুন্নাহর আলোকে এই ইবাদতের
বিস্তারিত আহকাম ও বিধান ফিকহের কিতাবে সংকলিত হয়। সদাকাতুল ফিতরা কার উপর
ওয়াজিব হয় কাদের পক্ষ থেকে আদায় করতে হয় এইসব বিবরণী হাদিস ও ফিকহের কিতাবে
বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে ।
এই সাদকার পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস ও সুন্নাহে দুটি মাপকাঠি নির্ধারণ করা দেয়া
হয়েছে, ' যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক 'সা' এবং গম দ্বারা আদায়
করলে 'লিসফে সা' প্রযোজ্য হবে ।
এখানে একটি ভীষণ মনে রাখা উচিত যে মূল্যর দিক থেকে ওই খাদ্যবস্তু গুলোর মধ্যে
তফাৎ আছে।
কোন দাম বেশি কোনটির কম তো সবচেয়ে কম দামের বস্তুকে মাপকাঠি ধরে কেউ যদি
সদাকাতুল ফিতরা আদায় করে তাহলে আদায় হয়ে যাবে তবে উত্তম হলো নিজ নিজ সামর্থ্য
অনুযায়ী বেশি মূল্যের খাদ্যবস্তুকে মাপকাঠি ধরে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা হয়।
বর্তমানে দর হিসেবে যেহেতু গমের দাম সবচেয়ে কম। তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ
থেকে প্রতি বছর আধা 'সা' গমকে মাপকাঠি ধরে ফিতরা সর্বনিম্ন পরিমাণ ঘোষণা করা হয়।
টাকায় অংকটি নির্ধারিত হয় আধা 'সা' গমের ওই সময়ের বাজারদর হিসেবে।
সদাকাতুল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব
রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত হচ্ছে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা। রোজা
একটি দৈহিক ইবাদত হলেও তার পূর্ণতা সাধিত হয় সদাকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে আপনি
যদি সদাকাতুল ফিতর আদায় করেন তবেই আপনার রোজা পূর্ণতা পাবে। আল্লাহর প্রতি
অন্তরের ভয় থেকে দিনব্যাপী পানহার ও স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাকা রোজার মূল কাজ
হলেও রোজাকে পরিপূর্ণ রূপে সৌন্দর্যমন্ডিত করতে হলে আরো বহু রকমের শিষ্টাচার
কিন্তু পালন করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
আরবি মাসের নাম ক্যালেন্ডার ২০২৪
হযরত আবদুল ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতর রোজাদারের অনর্থক ও অশ্লীল কাজের পবিত্রতা স্বরূপ এবং
নিঃস্ব লোকদের জীবিকা হিসেবে ওয়াজিব করেছেন। যে ব্যক্তি তা ঈদের নামাজের আগে
আদায় করবে তা আল্লাহ তাআলার কাছে মকবুল সদকা হিসেবে পরিগণিত হবে আর যে ব্যক্তি
তা ঈদের নামাজের পর আদায় করবে তা সাধারণ দান হিসেবে গণ্য হবে।
(আবু দাউদ :১৬০৯)
এতিম ও গরিব শিক্ষার্থীদের দ্বীনই শিক্ষাদানের ব্যবস্থাপনা কারী মাদ্রাসা গুলোতে
সদাকাতুল ফিতর প্রদান করলে দরিদ্র বিমোজনের পাশাপাশি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
প্রতিষ্ঠায় সদাকাতুল ফিতরার মাধ্যমে অবদান রাখা যায়। এখানে সদাকাতুল ফিতরা হল
রোজা খোলার সদাকাতুল ফিতর এমন দান যা দিয়ে গরিব অসহায় মানুষ মেতে উঠবে ঈদের
আনন্দে। আল্লাহ তাআলা বলেন,' নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে যে পরিশুদ্ধ হয়।
'( সুরা আলা, আয়াত:১৪)
সদাকাতুল ফিতর আদায় করা কি ওয়াজিব
সদাকাতুল ফিতরা আদায় করা কি ওয়াজিব এ সম্পর্কে নানা রকমের মতবাদ চলে যে
সদাকাতুল ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নাকি। সদাকাতুল ফিতরা কার উপর ওয়াজিব হয়
তাদের পক্ষ থেকে আদায় করতে হয় এইসব নিয়ে নানা রকমের কিন্তু মতবাদ রয়েছে।
রমজান মাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ আমলের মধ্যে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা কিন্তু অনেক
গুরুত্বপূর্ণ।
ফিতরা আরবি শব্দ যা ইসলামের যাকাতুল ফিতর বা সদকাতুল ফিতর নামে পরিচিত ফি তোর বাপ
হাতুর বলতে সকলের খাদ্যদ্রব্য কে বোঝানো হয়েছে যা দ্বারা রোজাদার রোজা ভঙ্গ
করেন। সদাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব দুস্থদের মাঝে রোজাদারদের
বিতরণ করা দানকে। রোজা করার পর সন্ধ্যায় ইফতার বা সকালে খাদ্য গ্রহণ করা হয়
সেজন্য রমজান মাস শেষে এই দানকে সাদা কাতুল ফিতর বা সকালের আহারের যাকাত বলা হয়।
এছাড়াও পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা সদাকাতুল ফিতরের প্রতি ইঙ্গিত করে ইশারা
করেছেন, 'নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে সে যে পরিশুদ্ধ হয় ।' (সুরা আলা,
আয়াত:১৪)রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন,ওই দিন ভিক্ষুকদের ভিক্ষা চাওয়া থেকে মুক্তি করে
দাও । ঈদুল ফিতরের দিন সুবহানা সাদিকের সময় কারো কাছে থেকে যাকাতের হিসাবে
সমপরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা।
আরো পড়ুনঃ
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
অথবা তার সমমূল্য নগদ অর্থ কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত কিছু সম্পদ
যদি বিদ্যামান থাকে। এরপর কিন্তু তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে আর যার ওপর
সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব আদায় করা হবে তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেন আদায় করেন তেমনি
নিজের অধীনস্থদের পক্ষ থেকে আদায় করবেন তবে এতে যাকাতের মত বর্ষ অতিক্রম হওয়ার
শর্ত নয়। (ফাতহুল কাদির :২/২৮১)
নারী পুরুষ, স্বাধীন পরাধীন, শিশু বৃদ্ধ, ছোট বড় সব মুসলিমদের ওপর কিন্তু
সদাকাতুল ফিতর প্রদান করা ওয়াজিব। সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়া মাত্রই আদায়
করতে হবে নাকি পরে করলে চলবে? এ ব্যাপারে অনেকে নানা রকমের কথা বলে কিন্তু এটি
ওয়াজিব হওয়ার পর পর সদাকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম।
সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম
ঈদুল ফিতর আদায় মানে সকলের মধ্যে সমান পরিমাণে অর্থ বন্টনের মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের
আনন্দ সকলকে ভাগাভাগি করে দেওয়া যারা গরিব দুঃখী তাদের দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্যই
কিন্তু সদাকাতুল ফিতর আদায় করা সকলের জন্য ওয়াজিব।
আরো পড়ুনঃ
যাকাত দেওয়ার নিয়ম ২০২৪
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন,'আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা পরিমাণ যব অথবা
এক সা পরিমাণ খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির অথবা এক সা পরিমাণ কিসমিস দিয়ে
সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম। (বুখারী, হাদিস: ১৫০৬)
হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ২ পরিমাপে পাঁচ জিনিস দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায় আর তা
হলো গম জব কিসমিস খেজুর পনির এই সবগুলো মধ্যে গমের পরিমাণ হলো অর্ধ সা আর
বাকিগুলোর পরিমাণ হলো এক সা। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো একটি দিয়ে এই
ফিতরা আদায় করতে পারবেন বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে এটি তুলে ধরা হলো।
- যব: যবের পরিমাপ হবে এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৯৬ টাকা।
- কিসমিস: কিসমিসের পরিমাপ ও এক সা। কেজির হিসেবে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ হাজার ৬৫০ টাকা।
- পনির: পনিরের পরিমাপ ও এক সা। কেজির হিসেবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যাব বর্তমান বাজার মূল্য ২ হাজার ৬৪০ টাকা।
- খেজুর : কিসমিসের পরিমাপ ও এক সা। কেজির হিসেবে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২৫০ টাকা।
- গম/আটা: গমভাটার পরিমাপ হবে অর্ধ সা। যা ৮০ তোলা সেরের মাপে এক সের সাড়ে ১২ ছটাক। আর কেজির হিসেবে এক কেজি ৬৫০ গ্রাম। তবে নূন্যতম পূর্ণ দুই সের কেজির মূল্য আদায় করা উত্তম যার বর্তমান বাজার মূল্য ১১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৯৭০ টাকা পর্যন্ত।
উপরোক্ত এই সকল পন্য দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করার নিয়ম তবে এর সমপরিমাণ টাকা
দান করে দেওয়াই ভালো।
লেখকের মন্তব্য।সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪।সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম।
প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় থেকে আপনাদের সামনে তুলে
ধরার চেষ্টা করেছি সদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ ২০২৪ এবং সদকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম
সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।আশা করি ইতিমধ্যে আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ে জানতে
ও বুঝতে পেরেছেন।আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান
মতামতটি আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।
আরো পড়ুনঃ
সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার কারণ
আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনার কাছে তথ্যবহুল এবং উপকৃত বলে মনে হলে আর্টিকেলটি
আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করুন।সবাইকে সঠিক পরিমাণ সদাকাতুল ফিতর
আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে জানতে উপকৃত করুন।আজকের আর্টিকেল সম্পর্কিত করে মতামত
থাকলে জানিয়ে দিতে ভুলবেন না।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url