ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম - ঈদের নামাজ কয় রাকাত
প্রিয় পাঠক আপনি কি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ঈদের নামাজ কয় রাকাত এ বিষয়
সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য।কেননা আজকের আর্টিকেলের
ভিতরে আমরা আলোচনা করতে চলেছি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ঈদের নামাজ কয় রাকাত
সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।
সেই সাথে আপনি ঈদের নামাজের নিয়ত , ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে, এবং ঈদের
নামাজের ফরজ কয়টিএ বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাই আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ঈদের নামাজ
কয় রাকাত সম্পর্কে।
আর্টিকেল সূচিপত্রঃঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম।ঈদের নামাজ কয় রাকাত
ভূমিকা।ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম।ঈদের নামাজ কয় রাকাত
প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয়ই থেকে আপনাদের সামনে তুলে
ধরার চেষ্টা করেছি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ঈদের নামাজ কয় রাকাত এ বিষয়
সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।সেই সাথে আমরা আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিব ঈদের
নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি, ঈদের নামাজ কয় তাকবীর এবং ঈদের নামাজ কত হিজরীতে
শুরু হয়।
আরো পড়ুনঃ যাকাত দেওয়ার নিয়ম ২০২৪
আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা সে
সমস্ত বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যা আপনারা মনে মনে জানতে চেয়েছেন।আজকের
আর্টিকেল আপনি যদি শেষ পর্যন্ত পড়েন।তবে আপনিও ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এ নিয়মে
সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ঈদের নামাজের নিয়ত।ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
আপনারা কি ঈদের নামাজের নিয়ত জানেন না প্রথমেই ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত করে
তাকবির বলে তাহরীমা বাড়তে হয় এইজন্য ঈদের নামাজের নিয়ম ও ঈদের নামাজের নিয়ত
সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি ঈদুল ফিতরের ঈদের নামাজের
নিয়ত।
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকা'য়াতাই সালাতি ঈ'দিল
ফিত্বরি মা'আ সিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা
জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবর।
বাংলায় নিয়ত: ছয় তাকবীরের সাথে ঈ'দুল ফিতরের ওয়াজিব নামায ক্বিবলামুখী হয়ে
আদায় করছি।
মুক্তাদিগণ ওয়াজিবুল্লাহি তা'আলা বলে ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম বলবে।
ঈদের নামাজের নিয়ম।ঈদের নামাজ কয় রাকাত
আপনারা কি ঈদের নামাজের নিয়ম জানেন যারা ঈদের নামাজ পড়তে যান এবং ঈদের নামাজের
নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাদের জেনে রাখা দরকার যে ঈদের নামাজের নিয়ম
সম্পর্কে।ঈদের নামাজ যেখানে পড়েন না কেন বাসাতে মসজিদে বা যে কোন জায়গাতে
আপনাকে কিন্তু ঈদের নামাজের নিয়মটা অবশ্যই জানা থাকা দরকার।
প্রথমে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত করে তাকবীর বলে। তাহারিমা বাঁধবে তারপর
সুবহানাকা পড়বে ও তাসমিয়া পাঠ করে। ইমাম উচ্চস্বরে তিনবার তাকবির বলবে এবং
প্রত্যেকবারে তাকবির বলার সাথে সাথে কানের লতি পর্যন্ত হাত তুলবে। প্রত্যেকবারই
হাত ঝুলিয়ে দিবে মুক্তাদির গণ সাথে সাথে হাত উঠাবে এবং চুপে চুপে তাকবীর বলবে।
আরো পড়ুনঃ সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার কারণ
তারপর ইমাম উচ্চস্বরে সূরা ফাতেহা ও তৎসহ কোন সূরা বা কেরাত পাঠ করবে। মুক্তাদিগণ
উহাকেবল শ্রবণ করবে। অতঃপর রুকু সিজদা করে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাকাতে জন্য সুরা
ফাতেহা ও কি রাত ৫ শেষ করে তাকবির বলার সাথে সাথে হাত কানের লতি পর্যন্ত উঠাবে
এবং তিনবার তাকবীর বলে এবং প্রথমবারের ন্যায় প্রতে্যকবার হাত ঝুলিয়ে দেবে।
৪র্থ বার তাকবীর বলে রুকূ'তে যাবে এবং যথারীতি রুকু সিজদা করে নামায শেষ করবে।
অতঃপর ইমাম দাঁড়িয়ে দু'টি খুৎবা পাঠ করবে। খুৎবা শেষ হলে মুনাজাত করবে। খুৎবা
ঈদের কর্তব্য ও ফজিলত বর্ণনা রয়েছে তা নামাজের পূর্বে বাংলা ভাষায় মুক্তাদির
গণকে বুঝিয়ে দেওয়া উত্তম।আল্লাহ তায়ালা সকল মুমিনগণকে সহি শুদ্ধভাবে ঈদের
নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন আমিন।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে
আসসালামু আলাইকুম ঈদ মানে আনন্দ ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে আপনারা কি
জানতে চান। আপনাদের জন্য ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে নিয়ে এসেছি চলুন জেনে
আসি ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে।
আরবি: مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ
بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ
اَكْبَرْ
উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল
ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি
মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবর।
অর্থ: আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে
এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি- ‘আল্লাহু আকবার’।
ঈদের নামাজের ফরজ কয়টি
আপনারা কি জানেন ঈদের নামাজে ফরজ কয়টি ও কি কি এই সম্পর্কে যারা জানেন না
তাদেরকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে। যে ঈদ পালন যেমন আনন্দ তেমনি ঈদের নামাজ পালন
জরুরি। কিন্তু আনন্দের এই ঈদের নামাজ পালন করতে কয়েকটি ফরজ পালন করতে হবে ঈদের
নামাজের ফরজ কয়েকটি চলুন জেনে আসি।
আরো পড়ুনঃ ৪০ দিন তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
মুসলমানদের যে দুইটি উৎসব বৃহৎ আঘাত একত্রিত হয়ে এই নামাজ আদায় করা হয় তা হলো
ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা।নামাজ ফরজ ইবাদত। নামাজ বেহেস্তের চাবি নামাজ ছাড়া
জান্নাতে যাওয়া সম্ভব নয়। নামাজের ফরজ মোট ১৩ টি আহকাম ৭ টি আরকান ছয়টি।
নামাজের বাইরের কাজগুলোকে আহকাম বলে। আর নামাজের ভিতরের কাজগুলোকে আরকান বলে।
নামাজের বাইরে ৭ ফরজ
- শরীর পবিত্র হওয়া।
- কাপড় পবিত্র হওয়ার ।
- নামাজের জায়গা পবিত্র হওয়া।
- সতর ঢাকা থাকা (পুরুষের সতর নাভি থেকে হাঁটু, নারীদের সতর হাতের কব্জি পায়ের পাতা ও মুখ ছাড়া পুরো দেহ)
- কিবলামুখী হওয়া।
- ওয়াক্ত মত নামাজ আদায় করা।
- নামাজের নিয়ত করা।
নামাজের ভিতরে ছয়টি ফরজ :
- তাকবীরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামাজ শুরু করা ।
- দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া
- সুরা ফাতেহার সাথে কুরআন পড়ার
- রুকু করা
- দুই সিজদাহ করা
- শেষ বৈঠক করা
আপনারা উপরোক্ত সকল ফরজগুলো মেনে চলবেন। ঈদের নামাজের ফরজ মেনে চালার তৌফিক
আল্লাহ সবাইকে দান করুন।
ঈদের নামাজ কত হিজরীতে শুরু হয়
আপনারা আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন ঈদের নামাজ কত হিজরীতে শুরু হয় আসলে
ঈদের নামাজ কত হিজরীতে শুরু হয় এই সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকেরই রয়েছে চলুন
জেনে আসি ঈদের নামাজ কত হিজরীতে শুরু হয়।
আরো পড়ুনঃ তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম
ঈদুল ফিতর হিজরী সনের দশম মাস শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে উদযাপন করা হয়। ঈদুল
আযহা হিজরী সনের দ্বাদশ মাস,জ্বিলহজ্জ মাসের দশমদিনে উদযাপন করা হয়। দ্বিতীয়
হিজরীতে রমজানের রোজা ফরজ হয় একই হিজরীতে ঈদুল আযহার নামাজ ও কোরবানির বিধানও
নাযিল হয়। মুসলমানরা প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে দ্বিতীয় হিজরী মোতাবেক ৬২৪
খ্রিস্টাব্দে ৩০ বা ৩১ শে মার্চ।
ঈদের নামাজ কয় তাকবীর
ঈদ মানে আনন্দ এবং ঈদ মানে দোয়া ও আল্লাহর কাছে নিজের মনের সকল আশা গুলো বলা।
চোখের দেখা সূর্য দিগন্ত থেকে আনুমানিক ২ মিটার উচ্চতায় পৌঁছালে ঈদের নামাজ পড়া
হয়। জোহরের নামাজের আগে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজ জামাতের সঙ্গে
আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজ সাধারণত খোলা মাঠ বা ঈদগাহে পড়া হয়।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম
তবে এরূপ স্থানের অভাব হলে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে।ঈদের নামাজ ৬
তাকবীরের হয়ে থাকে তবে ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বা ১২ তাকবীর রয়েছে ৬
তাকবীরের ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতের শুরুতে অতিরিক্ত তিন তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতে
অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিতে হয় প্রথম রাকাতে ছানা পাঠের পর কানের লতি পর্যন্ত হাত
তোলার পরপর তিন তাকবীর বলতে হয়।
দ্বিতীয় রাকাতের সূরা পাঠ আনতে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলতে হয়
অতিরিক্ত তাকবির বলার পর কানের লতি থেকে হাত নামিয়ে আনতে হয়। বারো তাকবিরের
ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে শুরুতে অতিরিক্ত ৭ তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতে
অতিরিক্ত ৫ তাকবীর দিতে হয়। প্রথম রাকাতে ছানা পাঠের পর কানের লতি পর্যন্ত হাত
তুলে পর পর সাতবার তাকবির বলতে হয় দ্বিতীয় রাকাতে সূরা পাঠের শুরুর পূর্বে
অতিরিক্ত ৫ তাকবীর বলতে হয়।
নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি
নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি আপনারা কি জানেন চলুন জেনে আসি। নামাজের ওয়াজিব
কয়টি ও কি কি যা আমাদের পালন করতে হবে।
- নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি।
- সুরা ফাতেহা পড়া।
- সূরা ফাতিহা পর সূরা মিলানো
- ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে কিরাতের জন্য নির্ধারিত করা।
- কিরআত,রুকু, সিজদার মধ্যে তরতিব ঠিক রাখা
- রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো
- দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
- রুকু, সিজদা, দাঁড়িনো ও বৈঠক তাসবিহ পরিমাণ স্থির থাকা
- তিন বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের দুই রাকাতের পর আত্তাহিয়াতু পড়া বা সমপরিমাণ সময় বসা
- প্রথম ও শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া
- ফরজ, মাগরিব ও এশার নামাজের প্রথম দুই রাকাতে ইমামের জন্য উচ্চস্বরে কিরাআত পড়া, জোহর, আসর নামাজের মধ্যে ইমাম ও একাকী নামাজের অনুচ্চ শব্দে কিরাআত পড়া।
- সালাম ফিরানো
- বেতের নামাজের দোয়ায়ে কুনুত পড়া
- দুই ঈদের নামাজ ছয় তাকবীর বলা
- প্রত্যেক রাকাতে ফরজ ও ওয়াজিবগুলো তরতিব ঠিক রাখা।
শেষ কথা।ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম।ঈদের নামাজ কয় রাকাত
প্রিয় পাঠক ভাই ও বন্ধুগণ আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ করে ইতিমধ্যে
জানতেও বুঝতে পেরেছেন ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম এবং ঈদের নামাজ কয় রাকাত সম্পর্কিত
সকল তথ্য।আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যবহুল এবং উপকৃত বলে মনে
হয়েছে।আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি
আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।
আরো পড়ুনঃ কত ভরি স্বর্ণ থাকলে যাকাত দিতে হয়
এছাড়াও আপনি যদি ইসলাম সম্পর্কিত আরো পোস্ট পড়তে চান। তাহলে আমাদের
ওয়েবসাইটি ঘুরে আসুন এবং ভিজিট করে রাখুন।এতক্ষণ সময় ধরে আমাদের সঙ্গে থেকে
পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।আজকের আর্টিকেল আপনার বন্ধু এবং
আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।আজ এ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ
থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url