তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনি কি তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম এবং তারাবির নামাজ নাকি
নফল এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য।কেননা
আজকের আর্টিকেলের ভিতরে আমরা আলোচনা করতে চলেছি তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার
নিয়ম এবং তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল এ সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।
সেই সাথে আপনি আরো তারাবির নামাজের ফজিলত হাদিস ২০ রাকাত তারাবির হাদিস সহীহ এবং
তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাই আজকের আর্টিকেল
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার
নিয়ম এবং তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল সে সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃতারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম এবং তারাবির নামাজ সুন্নত
নাকি নফল।
ভূমিকাঃ তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম।তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
শুরু হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই পবিত্র মাহে রমজান।এই মাহে রমজানকে ঘিরে প্রত্যেক
মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে আনন্দ উল্লাস ও বছরের পবিত্র একটি মাস উদযাপন করতে পেয়ে
সকলেই আনন্দিত হয়।তাই এ পবিত্র মাহে রমজান আমাদের সিয়াম পারনের মাস।এই দিনগুলো
প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তি রোজা রেখে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ও বিভিন্ন আমল করেন।
আরো পড়ুনঃ ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম
তাই আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আপনারা অনেকে জানতে প্রশ্ন করেছেন তারাবির নামাজ ৮
রাকাত পড়ার নিয়ম এবং তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল।তাই আজকের আর্টিকেলের মধ্যে
আমরা শেয়ার করব আপনাদের সাথে তারাবি নামাজ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।হতে
পারে আজকের আর্টিকেলটি আপনার তারাবির নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।যা জেনে আপনি
অনেক উপকৃত হতে পারেন।তারাবির নামাজ আদায়ের সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে আর্টিকেলটি
সম্পূর্ণ পড়ুন।
তারাবির নামাজের ফজিলত হাদিস
ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদতের মধ্যে কিন্তু নামাজ ও রোজা ধনী গরিব নির্বিশেষে
সবার জন্য এইজন্য এই নামাজ ও রোজা সকলেরই পালন করা ফরজ। রমজান মাসে সারাদিন
সিয়াম সাধনা ও সালাত আদায়ের পর ইফতারের পরবর্তীতে এশার নামাজের পরে যখন তারাবির
নামাজের সময় হয় সে সময় কিন্তু সকলের জন্য তারাবির নামাজ পড়া সুন্নত।
আরো পড়ুনঃ সাহু সিজদার নিয়ম
প্রিয় নবীজি (সাঃ) এরশাদ করেছেন, 'নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি রোজা
ফরজ করেছেন আর আমি তোমাদের জন্য তারাবি নামাজকে সুন্নত করেছি, যে ব্যক্তি ইমানের
সঙ্গে সোয়াবের আশায় রমাদানে দিনে রোজা পালন করবে ও রাতে তারাবির নামাজ আদায়
করবে সে গুনাহ থেকে এরূপ পবিত্র হবে যে রূপ নবজাতক শিশু মাতৃগর্ভ থেকে নিষ্পাপ
অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়। '( নাসায়ী: ২৩৯)
ইবাদত পালন করতে হয় সুন্নতে পদ্ধতি অনুসারে রমজানের চাঁদ দেখা গেলে রোজার আগে
তারাবির নামাজ আদায় করার রমজানের সুন্নত হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণনা করেন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেন,' যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশে
রমাদান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
(বুখারি, হাদিস: ৩৬)।
তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম
রমজান মাস ইবাদতের মাস এই সময় ইবাদত করার জন্য তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম এবং যারা তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়তে চান কোন নিয়মে পড়তে হবে সেই সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানাবো আপনাদের। আপনারা যদি তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন তারাবির নামাজ আট রাকাত পড়ার নিয়ম।
আরো পড়ুনঃ ১ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ত
এশার চার রাকাত সুন্নত এশার চার রাকাত ফরজ ও এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার পরে আপনারা তারাবির নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিবেন। দুই রাকাত দুই রাকাত করে তারাবির সালাত আদায় করতে হবে। যেভাবে অন্য সালাত আদায় করতে হয় দুই রাকাআত দুই রাকাআত এভাবে চার রাকাআত হওয়ার পর বিশ্রাম নিতে হবে সমপরিমাণ চার রাকআত নামজের।
এরপর আবার নামাজ পড়তে হবে দুই রাকআত করে এভাবে আট রাকাআত নামাজ আদায় করতে হয় তারাবি। তারাবির নামাজ নারী ও পুরুষের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তারাবির নামাজ দুই ভাবে পড়া যায় আপনারা যদি তারাবির নামাজ সূরার মাধ্যমে পড়তে চান তাহলে সূরার মাধ্যমে পড়তে পারবেন এছাড়াও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে একমাস তারাবির নামাজ পড়ার মাধ্যমে কোরআন খতম করা হয়।
২০ রাকাত তারাবীর হাদীস সহীহ
নামাজ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই ২০ রাকাত তারাবির হাদীস সহীহ সম্পর্কে আপনারা
অনেকেই জানতে চেয়েছেন কারণ অনেকের মনে ধারণা রয়েছে যে তারাবির নামাজ আসলে কত
রাকাত পড়তে হয় ২০ রাকাত নাকি ৮ রাকাত তবে বিভিন্ন মতপার্থক্য থেকে বিভিন্ন
রকমের দলিল প্রমাণ করা হয় তারাবির নামাজ কত রাকাত এই সম্পর্কে। চলুন জেনে আসি ২০
রাকাত তারাবির হাদিস সহীহ।
তারাবির রাকাত সংখ্যা শরিয়াতে বিশুদ্ধ দলিল প্রমাণ দ্বারা পরিমাপ প্রমাণিত
গ্রহণযোগ্য সূত্রে বর্ণিত আছে, যে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাহাবায়ে
কেরামকে নিয়ে ২০ রাকাত তারাবি পড়েছেন ।
মাহে রমজানের রাত্রিকালে এশার নামাজের পর চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নত এর পর
এবং বেতের নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়
একে তারাবির নামাজ বলা হয়।
আরো পড়ুনঃ দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাত হিসেবে প্রমাণিত হয়। কেউ কেউ হযরত রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর ২০ রাকাত তারাবির বিষয়টিকে হাদিস এ হাদিসের সূত্রে
বিচারের অনির্ভরযোগ্য প্রমাণ করলে বিশুদ্ধ সূত্রে জানা গেছে যে রাসুল (সাঃ) ২০
রাকাতের তারাবির নামাজের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা:) সাহাবীদের নিয়ে মাত্র তিন দিন জামাতের সাথে তারাবি আদায় করার
পর ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় জামায়াতের সাথে তারাবি পড়া ছেড়ে দিলেন তারপর
রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর বাকি জীবনে আবু বকর (রা:) এর খিলাফতকালে এবং
উমর (রা:) এর খিলাফতের প্রথম দিকে এ অবস্থাই বিদ্যমান ছিল। ( সহিহ বুখারি ১/২৬৯)
ইমাম বায়হাকী (রহ:) বর্ণনা করেন,' বিখ্যাত সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (রা:) বলেন,
আমরা হয়রত উমর (রা:) এর যুগে বিশ রাকাত তারাবি এবং বিতর পড়তাম।'
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তারাবির নামাজ নিয়ে বিভিন্ন রকমের মতবাদ রয়েছে তবে তারাবির নামাজ কত রাকাত এই
নিয়েই শুধু মতবাদ নয় তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল এই নিয়ম কিন্তু অনেকের মনে
প্রশ্ন রয়েছে। তারাবি বা কিয়ামুল লাইল একটি বিশেষ সুন্নত নামাজ যেটি মুসলিমগণ
রমজান মাসব্যাপী প্রতি রাতে এশার ফরজ নামাজের পর দীর্ঘ তিলাওয়াত সহকারে পড়ে
থাকেন।
আরো পড়ুনঃ ২০২৪ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার
তারাবির সালাত জোড়া জোড়া রাকাত করে যে কোন জোড়া সংকট রাখার পড়া হয় তারাবি
সালাতের পর ভেতর সালাত পড়া হয় তারাবির নামাজের রাকাত নির্দিষ্ট করা হয়নি তবে
তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা।তারাবির নামাজ নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে
মুয়াক্কাদা( তবে পুরুষ মসজিদে জামাতের সাথে আর মহিলাগণ ঘরে পড়বে) কেননা
খোলাফায়ে রাশিদিন (বিশেষ করে উমর রায়ি. এর খেলাফতের শেষ জামানা থেকে) মুয়াযাবাত
তথা নিয়মিত তারাবী নামাজ পড়তেন।
- রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন,' তোমরা আমার সুন্নতকে আঁকড়ে ধরো এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতকে আঁকড়ে ধরো তার ওপর তোমরা অটুট থাকো। (আবু দাউদ ৪৬০৭, তিরমিজি ২৬৭৬)
- ইমাম নববী বলেন,' আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবির নামাজ পড়া সুন্নত। (আলমাজমূ ৪/৩১)
তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন তারাবির নামাজ সুন্নতে মুকাদ্দার ওয়াজিবের মতনই
অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহি করতে হয়। তেমনি সুন্নতে মুকাদ্দার
ক্ষেত্রে জবাবদিহি করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত ও শাস্তি পেতে
হবে আর সুন্নতে মুকাদ্দেয়া ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়ে যাওয়া যেতে পারে তবে
শাস্তিও পেতে হবে।
তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে
রমজান মাস ইবাদত বন্দুকের মাস এই মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে যত বেশি নিজের করে
আসা গুনা হওয়ার জন্য ইবাদত বন্দেগী করে ক্ষমা চাওয়া হয়। আল্লাহ তা'আলা তত বেশি
খুশি হয়ে বান্দাদের গুনাহ গুলা মাফ করে দেয় এই জন্য রমজান মাসে তারাবির নামাজ
পড়ার জন্য আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম শিক্ষা দিয়ে গেছেন তারাবির
নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
অনেকেরই শুধুমাত্র রমজান মাসে এশার নামাজ পড়াকে যথেষ্ট মনে করে তারাবি না পড়লে
কোন সমস্যা নেই এরকম ভাবে মূলত তারাবির নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। উজর
ছাড়া না পড়লে সুন্নতে মুয়াক্কাদা তরখ করার গুনাহ হবে। লাগাতার ছেড়ে দেওয়া
কবিরা গুনহার মধ্যে শামিল।( রদ্দুল মুহতার ২/৪৯৫)
আরো পড়ুনঃ সংসারে বরকতের দোয়া
এছাড়াও তারাবির নামাজ জামাতে পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। যে ব্যাকটি পরে
যোগ দেওয়ার কারনে কিছু তারাবি রয়ে গেছে তিনি ইমামের সাথে বিতর পড়ে নিবেন তারপর
অবশিষ্ট তারাবির নামাজ আদায় করবেন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অপ্রাপ্তবয়স্ক
ছেলেকে হাফেজ হোক বা না হোক ইমাম বানানো হয় এটা ঠিক নয়।
যে তারাবি পড়াবে তার নিকট থেকে আয়াতের অর্থ কিংবা সারসংক্ষেপ জেনে নেওয়া ভালো।
যখন থেকে সাহাবীরা এই পড়া শুরু করেছেন তখন থেকে তারা দুই সালামের পর অর্থাৎ চার
রাকাত নামাজের পর বিশ্রাম নিতেন তাই এই নামাজের নাম তারাবির নামাজ হয়েছে।
শেষ কথাঃ তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম।তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
প্রিয় পাঠক ভাই ও বন্ধুগণ আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ করে জানতেও
বুঝতে পেরেছেন তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম এবং তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি
নফল।আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যমূল এবং উপকৃত বলে মনে
হয়েছে।আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো যা আপনার মূল্যবান মতামতটি
আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।এতক্ষণ সময় ধরে আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ার
জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরো পড়ুনঃ লোহিত সাগেরর পানি লাল কেন
এছাড়াও আপনি যদি ইসলামিক আরও তথ্য সম্পর্কে জানতে চান?তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে
ঘুরে আসুন এবং ভিজিট করে রাখুন। আজকের আর্টিকেলে এ পর্যন্তই আবার কথা হবে অন্য
কোন টপিক নিয়ে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url