চেয়ারে বসে নামাজ পড়া কি জায়েজ - চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার ছবি

আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা সে সমস্ত বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যা আপনারা মনে মনে জানতে চেয়েছেন।আজকের আর্টিকেল আপনি যদি শেষ পর্যন্ত পড়েন।তবে আপনিও চেয়ারে বসে নামাজ পড়া কি জায়েজ এ নিয়মে সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আপনি কি চেয়ারে বসে নামাজ পড়া কি জায়েজ সে সম্পর্কে জানতে চান। চেয়ারে বসে নামাজ অনেকেই পড়ে আসলে মানুষের সাধ্যের বাইরে কোন কিছুই ইসলাম চাপিয়ে দেননি। কারণ ইসলাম সহজতর জীবনঘনিষ্ঠ ও স্বভাবজাত ধর্ম আল্লাহর দেওয়া সব বিধানের মধ্যে নামাজ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

অসুস্থ হলেও নামাজ আদায় করতে হয় তবে সেক্ষেত্রে ইসলাম কিছুটা অবকাশও দিয়ে থাকেন। ইসলাম অসুস্থদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রেখেছেন ভিন্ন পদ্ধতিতে নামাজ আদায়ের সুযোগ দিয়েছেন তবে এর জন্য বিশেষ নীতিমালাও রয়েছে দাঁড়াতে ও চেষ্টা করতে সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য নামাজ কিয়াম বা দাঁড়ানো ফরজ।

দাঁড়াতে বা সিজদা আদায়ের সপ্তম হওয়ার শর্তেও যদি কেউ ফরজ ওয়াজিব নামাজে বসে আদায় করে তবে তার ফরজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে তার নামাজ হবে না নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। ( দুররে মুখতার, জাকারিয়া বুক ডিপো : ২/১৩২)

সিজদা করতে সক্ষম ব্যক্তি যদি নামাজের কিছু অংশে দাঁড়াতে সক্ষম হয় এবং পুরো সময় দাঁড়িয়ে থাকতে অপরাগার ধারেকে তবে যেটুকু সময় দাঁড়াতে পারবে তাকে বল লাঠি বা দেওয়ালের সঙ্গে ঠেস দেওয়া হলেও সেটুকু সময় দাঁড়ানো ফরজ।এই অবস্থায় যদি না দাঁড়িয়ে এবং কোন কিছুর উপর হেলান দিয়ে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বসে নামাজ আদায় করে তবে নামাজ হবে না। (দুরবে মুখতার : ২/২৬৪)

আপনারা কি জানেন চেয়ারে নামাজ আদায় করার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ দুই বিধান রয়েছে। তাহলেই আপনার রাজ্যের চেয়ারের নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে চেয়ারে নামাজ আদায় বিষয়ে দুই গুরুত্বপূর্ণ বিধান সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করে জানাবো। যে ক্ষেত্রে শরয়িত ওজরের কারণে চেয়ারে বসে ইশারার মাধ্যমে নামাজ আদায় করার অনুমতি রয়েছে।

সেক্ষেত্রে সিজদার সময় ইশাররার ওপর ক্ষান্ত হওয়া উচিত। ও লিখিত দীর্ঘ আলোচনার সংক্ষিপ্ত নিম্নরূপ দেওয়া হল :

এক: যে ব্যক্তি দাঁড়াতে সক্ষম নয় কিন্তু যে কোন ভাবে মাটিতে বসে রুকু সিজদাহ করে নামাজ আদায় করতে পারবে। তাকে মাটিতে বসে রুকু সিজদাহ করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ার ইত্যাদিতে বসে ইশারায় রুকু সিজদাহ করে নামাজ আদায় করলে নামাজ আদায় জায়েজ হবে না।

দুই: আর কেউ যদি দাঁড়াতে পারে কিন্তু কোমর বা হাঁটুর ব্যথায় প্রচন্ড হওয়ার কারণে সিজদা করা শক্তি না রাখে অথবা সে মাটিতে বসতে পারে। কিন্তু রুকু সিজদার আর শক্তি রাখে না এরূপ লোক মাটিতে বসে নামাজ আদায় করবে।চেয়ার ইত্যাদির ব্যবহার তাদের জন্য উচিত নয়।

হ্যাঁ যদি কোন ভাবে মাটিতে বসার দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে তখন চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করা যেতে পারে। এ অবস্থায় চেয়ার ব্যবহার করলেও সাদামাটা চেয়ার ব্যবহার করবে আসলে অসুস্থ ব্যক্তির অবস্থান ভেদে চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের বিভিন্ন হুকুম হতে পারে। তাই এই বিষয়ে ঢালাও মন্তব্য কাম্য নয়।

ইসলাম ধর্মে ইবাদত করার জন্য আল্লাহ তাআলা আমাদের কয়েকটি উপায় দিয়েছেন প্রতিদিন আমাদেরকে সালাত আদায়ের করা ফরজ করেছেন ইসলামের সবচেয়ে বড় ইবাদত এবং ঈমানের পর সবচেয়ে বড় ফরজ হচ্ছে নামাজ। নামাজের ফরজ ও আরকান, ওয়াজিব ও সুনান আদব ও মুস্তাহাব ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবর্ণ হয়ে নামাজ আদায় করতে হবে।

এজন্য নামাজ আদায়ের পদ্ধতি হলো নামাজের সকল আরকানো ওয়াজিব সুনানে এবং আদব ও মুস্তাহাবের প্রতি যথাযথ খেয়াল রেখে নামাজ আদায় করা দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা এবং রুকু সেজদা ও যথা নেমে আয় করা নামাজের বৈঠকে যে বিধান রয়েছে তার অর্থই হলো জমিন বা সমতলে বসা আর সিজদা মূলত নামাজের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুকন।

এর হাকীকতই হচ্ছে, শরীরের উপর অংশ নিচু হওয়া আর পেছনের অংশ উঁচু হওয়া সিস্তার পদ্ধতি সম্পর্কে হাদিস শরীফে এসেছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস( রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছে, 'আমাকে সাতটি অঙ্গ দ্বারা সিজদাহ করতে (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আদেশ করা হয়েছে) * কপাল ও নাক *দুই হাত, *দুই হাঁটু * দুই পায়ের আঙ্গুলসমূহ (সহীহ বুখারী, হাদীস:৮১২)

এ হাদিস থেকে এটি স্পষ্ট যে এই সাত অঙ্গ ব্যবহার করে সিজদা করলে তা পরিপূর্ণ সিজদাহ হবে এবং আল্লাহ তা'আলা এইভাবে সিজদাহ করার হুকুম প্রদান করেছেন। আর নিচে বসে সমতলে সিজদা করার দ্বারা এই হুকুম আদায় হয় চেয়ারে বসে এভাবে আদায় করা কখনোই সম্ভব নয়। কুরআন সুন্নাহ হয় নামাজে যে পদ্ধতি ফরজ করা হয়েছে। চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করলে সেক্ষেত্রে সেই ফরজ আদায় করা কখনই সম্ভব নয়।

অনেকেই রয়েছেন যারা বিভিন্ন রকমের শারীরিক অসুস্থতার কারণে নামাজ পড়তে পারেন না দাঁড়িয়ে কিন্তু মাটিতে বসে নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাই যে মাটিতে বসে যদি নামাজ আদায় করা যায় তাহলে কোন নিয়মে মাটিতে বসে নামাজ পড়া যাবে। দাঁড়াতে ও সিজদা করতে সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য নামাজ কিয়াম বা দাঁড়ানো ফরজ।

তবে ইসলামে কারো উপর স্বার্থের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়নি বরং অসুস্থর জন্য রয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা। দাঁড়াতে বাসিজ আদায় সক্ষম হওয়ার সত্ত্বের যদি কেউ ফরজ- ওয়াজিব নামাজ বসে আদায় করে। তবে নামাজের ফরজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে তার নামাজ হবে না। নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। ( জাকারিয়া বুক ডিপো: ২/১৩২)

যদি অসহনীয় ও অস্বাভাবিক ব্যথা না হয় বরং সামান্য ব্যথা অনুভব হয় তাহলে শরীয়তীতে অক্ষমতা বলে বিবেচিত হবে না এই অবস্থায় নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই। (তাতারখানিয়া :২/৬৬৭)

যে ব্যক্তি দ্বারা তখন কিন্তু মাটিতে বসে সিজদার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে সক্ষম তাকে মাটিতে বসে সিজদাসহকারে নামাজ আদায় করতে হবে। মাটিতে সিজদা না করে চেয়ারের উপরে বসে বা মাটিতে বসে ইশারা করে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না। (তাতারখানিয়া:২/৬৬৭)

আপনারা কি জানেন নারীদের নিজ ঘরে নামাজ আদায়ের ফজিলত কতটা রয়েছে নারীদের সবসময় ঘরের মধ্যে থাকার জন্য আল্লাহতালা নির্দেশ রয়েছে নারীদের নিজ ঘরে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।হাদিসে এসেছে নারীদের পর্দার আড়ালে থাকার যোগ্য। নারী যখন বাড়ি থেকে বের হয় তখন শয়তান তার ওপর প্রবল হয়ে ওঠে।

এই হাদিসের আলোকে বোঝা যায় নারীদের বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়া অপছন্দনীয়। বাড়িতে বসে তাদের অনেক ইবাদত বন্দেগী করার সুযোগ রয়েছে। নারীদের নামাজ আদায় প্রসঙ্গে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন চলুন কয়েকটি হাদিস সম্পর্কে জেনে আসি।

হজরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'কোন নারী যখন তার বাড়ির সবচেয়ে অন্ধকারচ্ছন্ন কক্ষে বসে যে নামাজ আদায় করেন সেই নামাজ আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।'

তবে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করা নিষিদ্ধ নয় তারা মসজিদের গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে প্রিয় নবী রাসুল সাঃ এর যুগে নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেছেন এমনকি অন্ধকার রাতে ফজরের নামাজ ও মসজিদে গিয়ে পড়েছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'তোমরা তোমাদের নারীদের মসজিদে যেতে নিষেধ করবে না। তবে নারীদের ঘরে নামাজ আদায় তাদের জন্য উত্তম। '

নারীদের ঘরে নামাজ আদায়ের ফজিলত বর্ণনা করতে প্রিয় নবী রাসুল (সা) একটি দীর্ঘ হাদিস রয়েছে,

হযরত উম্মুহুমায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে বললেন,' হে আল্লাহর রাসূল আমি আপনার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে ভালোবাস। '

রাসূল (সা) বললেন, আমি জানি যে তুমি আমার সাথে সালাত আদায় করতে ভালোবাস।কিন্তু জেনে রেখো! তোমার ঘরে নামাজ আদায় তোমার পক্ষে নামাজ আদায় এর চেয়ে উত্তম। তোমার কখন নামাজ আদায় তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় থেকে উত্তম। আর তোমার বাড়িতে নামাজ আদায় তোমার কাওমের মসজিদে নামাজ আদায়ের থেকেও উত্তম।

অতঃপর ওই নারীর নির্দেশে,' তার বাড়ি থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী ও অন্ধকারচ্ছন্ন জায়গা একটি মসজিদ নির্মাণ করা হলো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেই মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। '( মুসনাদে আহমাদ, ইবনু খুজায়মা, ইবনু হিব্বান, আত তারগিব)

আপনারা কি চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার ছবি দেখতে চান যারা চেয়ারে বসে নানা যাতায়া ছবি দেখতে চান। তাদের জন্য নিচে কয়েকটি চেয়ারে বসে নামাজ পড়া ছবি দেওয়া হল। আপনারা দেখে বুঝতে পারবেন কিভাবে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে হবে। তাহলে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় হবে সঠিক নিয়মে।

প্রিয় পাঠক ভাই ও বন্ধুগণ আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ করে ইতিমধ্যে জানতেও বুঝতে পেরেছেন চেয়ারে বসে নামাজ পড়া কি জায়েজ সম্পর্কিত সকল তথ্য।আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যবহুল এবং উপকৃত বলে মনে হয়েছে।আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।

এছাড়াও আপনি যদি ইসলাম সম্পর্কিত আরো পোস্ট পড়তে চান। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটি ঘুরে আসুন এবং ভিজিট করে রাখুন।এতক্ষণ সময় ধরে আমাদের সঙ্গে থেকে পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।আজকের আর্টিকেল আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।আজ এ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।