স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ - রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক আপনি কি স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ এবং রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
সম্পর্কে জানতে অনলাইনে সার্চ করে তথ্য খোঁজাখুঁজি করছেন?তাহলে আজকের আর্টিকেল
আপনার জন্য।আজকের আর্টিকেলের ভিতরে আপনি জানতে পারবেন স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের
কারণ এবং রোজা মাকরুহ হলে করণীয় সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।
সেই সাথে আপনি রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ, স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল ফরজ এবং রোজা
ভঙ্গের কারণ হাদিস সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাই আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ এবং রোজা
মাকরুহ হলে করণীয় সম্পর্কিত সকল তথ্য।
পেজ সূচিপত্রঃস্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ।রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
ভূমিকা।স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ।রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় যা আজকের আর্টিকেলের
ভিতরে আমরা আলোচনা করতে চলেছি স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ এবং রোজা মাকরুহ হলে
করণীয় সম্পর্কিত সকল তথ্য।এছাড়াও আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা কিছু
গুরুত্বপূর্ণ টপিক আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আরো পড়ুনঃ রক্ত পরিক্ষা করলে কি রোজা ভাঙ্গে
যেমন সেহরি খাওয়ার পর স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা হবে, স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল ফরজ ও
রোজা ভঙ্গের কারণ এবং রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ সম্পর্কে। তাই আপনি যদি স্বপ্নদোষ
কি রোজা ভঙ্গের কারণ এ সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে চান
তাহলে আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন।
রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ
মাকরু হওয়ার কারণ সম্পর্কে আপনারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। কোন কোন
কারণগুলোতে রোজা মাকরুহ হয়ে যাবে। রোজা মাকরুহ হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে যা মেনে
চলতে হবে রোজা থাকা অবস্থায় চলুন জেনে আসি হবার কারণ সম্পর্কে।
- সারাদিন রোজা রাখার পর সঠিকভাবে এরপরে সন্ধ্যায় ইফতারের সময় আপনি যদি এমন কোন খাবার গ্রহণ করেন যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম তাহলে আপনার রোজা মাকরূহ হবে।
- রমজানে সারাদিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরূহ হবে।
- গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়ার রোজা মাকরূহ হয় আর এসব করার সময় পেটে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়।
- কোন কারণ ছাড়া কিছু চিপা তে থাকলে রোজা মাকরূহ হবে।
- কোন কিছু স্রেফ মুখে পুড়িয়ে রাখলেন খেলেন না তাতেও রোজা মাকরূহ হবে।
- মুখে লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার পেটে গেলে ক্ষতি নেই তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে তুলে রেখে পড়ে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হয়।
- পাউডার পেজ ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে রোজা মাকরূহ হয়।
- মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ রোজা রেখে এই কাজটি করলে রোজা মাকরুহ হয়।
- রোজা রেখে ঝগড়া বিবাদ করলে রোজা মাকরূহ হবে।
- যৌন উদ্দীপক কিছু দেখাবা শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে এতেও রোজা মাকরূহ হয় ।
- নাচ, গান, সিনেমা দেখা ও তাতে মজে থাকলেও রোজা মাকরূহ হয়।
- রান্নার সময় রোজাদার কোন কিছু স্বাদ নিলে লবণ চোখে দেখলে ঝাল পরীক্ষা করলে মাকরুহ হয় তবে বিশেষ প্রয়োজনের সেটা যদি করতে হয় তাহলে বৈধ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো ইসলামিক চিন্তাবিদ আহমাদুল্লাহ থেকে সোনা সকল বিষয়
যেগুলোর কারণে রোজা মাকরূহ হতে পারে।
স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ
রমজান মাসে নানা রকমের সমস্যা হতে পারে এবং রমজান মাসের একটি বড় সমস্যা হলো যে স্বপ্নদোষ অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে। সিয়ামরত অবস্থায় যদি কারো স্বপ্নদোষ হয় তাহলে তার সিয়াম নষ্ট হবে না যেহেতু তার অনিচ্ছায় এই কাজটি হয়েছে যে কোন আমলের মধ্যে যদি ইচ্ছাকৃত বিষয়ে না থাকে বা অনিচ্ছাকৃত কোন আমল বান্দার কাছ থেকে হয়ে যায় এটা যদি সিয়াম ভঙ্গকারী হয়ে থাকে তাহলে এর মাধ্যমে সিয়াম নষ্ট হবে না।
তবে আপনি যদি ইচ্ছা করে এই কাজটি করেন তাহলে আপনার রোজা ভাঙতে পারে। তবে আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি হঠাৎ এটি ঘটে যায় তাহলে আপনার রোজার কোন সমস্যা হবে না। রোজা থাকা অবস্থায় দুপুরে ঘুমানো নিষেধ নয় এমনকি ঘুমের ভিতরে স্বপ্ন দেখলে স্বপ্নদোষের কারনে রোজা ভাঙ্গে না। তবে স্বপ্ন দোষের কারনে গোসল করা ফরজ হয়।
আরো পড়ুনঃ ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
কিন্তু কেউ কেউ মনে করে রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তাদের এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল এই জন্য অবশ্যই আপনাকে ফরজ গোসল করে পরিষ্কার হয়ে যেতে হবে এবং রোজা রাখতে হবে।আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবী করিম (সা:) বলেন,' তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয় বমি, শিঙ্গা ও স্বপ্নদোষ।(বায়হাকি, হাদিস :৪/২৬৪)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, ছেলেদের মত মেয়েদেরও স্বপ্ন দেশ হয় স্বপ্নদোষ হলে ছেলে মেয়ে উভয়েই গোসল করা ফরজ হয়।অতএব উপলুক্ত হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায় যে স্বপ্ন দেশে মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে তাই স্বপ্নদোষের কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না সুতরাং রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙ্গে যায় এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। (ফতওয়ায়ে শামি, খন্ড:০২, পৃষ্ঠা :৩৬৬)
রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
আপনি যখন রোজা রাখবেন তখন আপনাকে এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে রোজা মাকরুহ হলে
আপনার রোজা হালকা হয়ে যাবে এবং আপনি পরিপূর্ণ সওয়াব লাভ করতে পারবেন না। আল্লাহ
তায়ালার অনুগত্য প্রকাশ করার জন্য ও নিজের সকল করে আসা অন্যায় জন্য ক্ষমা
প্রার্থনা করার জন্যই কিন্তু রোজা রাখা হয় এবং রোজা সময় বেশি বেশি দোয়া করে
আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়।
তবে এই রোজা মাকরুহলে করণীয় কি এই সম্পর্কে অনেকের জেনে রাখতে হবে। কারণ অনেকে
রোজা রেখে মিথ্যা কথা বললে যার কারণে রোজার প্রাণ হারিয়ে যায়। মূর্খতার মত
আচরণ, অন্যায় করা, প্রতারণা করা, অন্যের হক নষ্ট করা, ঘুষ খাওয়া, অন্যকে ঠকানো
এগুলো রোজা রেখে করা বেমানান রোজা রেখে এসব কাজ করলে রোজা কে প্রাণ হিন্দিহের মত
মনে হয়।
আরো পড়ুনঃ রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ
রোজা মাখরো যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে যে সকল কারণে রোজা মাকরুহ হয়
সে সকল কারণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে এবং সে সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
রোজা মাকরূহ মানে আপনার রোজা অনেক বেশি হালক হয়ে যাওয়া।ওষুধও ধূমপান টানা হাটের
অন্তর্ভুক্ত এবং স্বেচ্ছায় যে কোন প্রকার বীর্যপাত স্ত্রী সঙ্গমের অন্তর্ভুক্ত
কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে সহবাসে বাধ্য করে তাহলে স্ত্রী শুধু রোজা কাজা করবে এবং
স্বামী কাজা করবে কাফফারা দুটোই করবে।
এছাড়াও রোজা ভঙ্গের কারণ বা রোজা মাকরু হওয়ার কারণে কিন্তু অবশ্যই নিজেকে
খেয়াল রাখতে হবে। রমজানে পরিপূর্ণ সুফল পেতে চাইলে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ও
পরিপূর্ণ আমল করতে হবে। রমজান ও রোজার নিয়ম কানুন ও মাসয়ালা ভালোভাবে জেনে আমল
করলে রমজানে শিক্ষা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিল হবে এবং রোজা মাকরূহ হবে না।
স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল ফরজ
অনেকেই জানতে চাই যে স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করতে হয় স্বপ্নদোষ হলে কি গোসল করা
ফরজ হয়ে যায় আসলে স্বপ্নদোষ হলে গোসল করা ফরজ হয়ে যায়। কারণ স্বপ্নদোষ আমাদের
হাতে নিয়ন্ত্রিত না হলেও কিন্তু স্বপ্নদোষ হলে গোসল করা ফরজ। ফরজ গোসল করার জন্য
অবশ্যই পাক্ক পবিত্র হওয়ার জন্য স্বপ্নদোষ হলে অবশ্যই সাথে সাথে গোসল করে ফরজ
এবং নিজেকে শুদ্ধ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ৪০ দিন তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
তাই স্বপ্নদোয়েস্ট হলে আপনাদের যদি মনে খটকা লাগে এমন কিছু ঘটেছে অবশ্যই সাথে
সাথে গোসল করে নিতে হবে তবে স্বপ্নদোষ হলে কখনো রোজা ভাঙ্গে না যদি এটি ইচ্ছার
বিরুদ্ধে হয়ে থাকে অনিচ্ছাকৃত ঘুমের মধ্যে হয়ে থাকে রোজা থাকা অবস্থায় তাহলে
রোজা ভঙ্গ হবে না তবে স্বপ্নদোষ হলে কিন্তু গোসল করা ফরজ।
রোজা থাকা সময় অবশ্যই পাক পবিত্র থাকতে হবে এবং এরকম কোন ঘটনা ঘটলে অবশ্যই গোসল
করে নিতে হবে এবং পাক পবিত্র হয়ে যেতে হবে। ফরজ নিয়মে গোসল আর সাধারণভাবে গোসল
নিয়ে জানতে চান আপনারা অবশ্যই আপনি যেটা বলেছেন এর জন্য আপনাকে গোসল তো করতেই
হবে এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যেহেতু আপনার ওপর গোসল খরচ হয়ে গেছে আপনার
স্বপ্নদোষ হওয়ার কারণে তাই আপনাকে ফরজ গোসল করতে হবে।
সেহরি খাওয়ার পর স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা হবে
প্রায় মানুষ চিন্তা পড়ে যায় স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা হবে এই নিয়ে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু সেহরি খাওয়ার পর অজান্তে যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে রোজা হবে কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছা করে স্বপ্নদোষ হয় তাহলে তার রোজা থাকবে না। রোজা রাখার জন্য অবশ্যই নিজেকে সর্তক থাকতে হবে যেন এসব সমস্যা না হয়।
রমজান মাস ইবাদত মাস তাই এই সময় রোজা করতে হবে সব সময় মনে মধ্যে আল্লাহ তাআলা কাছে দোয়া করতে হবে। এক দিনের বেলা তো অনেকে ঘুমায় তাদের যদি ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হয় তাহলে কি তাদের রোজা ভেঙ্গে যাবে এই সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা খুব কম রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
আর তাদের এই ধারণাটি ঠিক নয় স্বপ্ন দেশের কারণে রোজা ভাঙ্গে না হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে তিনটি বস্তুর রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। বমি করলে তা অল্প কিংবা বেশি হোক, শিঙ্গা লাগানো। রোগের জন্য শরীরে সিঙ্গা লাগালে রোজার কোন ক্ষতি নেই। স্বপ্নদোষ নারী হোক কিংবা পুরুষ রোজা রাখা অবস্থায় দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। ( বায়হাকি, মুসনাদে বাযযার)।
উল্লেখ্য সজ্ঞান রাতে ক্রিয়া রোজা ভঙ্গ হয় ইচ্ছাকৃত হলে খাজা ও কাফফারা আদায় করতে হয়। আর অনিচ্ছায় হলে শুধু কাজা আদায় করতে হয়। স্বপ্ন যেহেতু সেই ইচ্ছায় নয় এবং সজ্ঞানেও নয় তাই রোজা অবস্থায় রাতে বা দিনে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙবে না স্বাভাবিকভাবে রোজা পূর্ণ করবেন।
উপসংহার।স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ।রোজা মাকরুহ হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ে জানতেও বুঝতে পেরেছেন
স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ এবং রোজা মাকরুহ হলে করণীয় সম্পর্কিত সকল তথ্য
আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যবহুল ও উপকৃত বলে মনে হয়েছে।আজকের
আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের কমেন্ট
বক্সে জানিয়ে দিন।
আরো পড়ুনঃ তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়ার নিয়ম
এছাড়াও আপনি যদি ইসলামিক আরও তথ্য ও পোস্ট পড়তে চান তাহলে আমাদের ওয়েব সাইটে
ঘুরে আসুন এবং ভিজিট করে রাখুন।এতক্ষণ সময় ধরে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।আজকের আর্টিকেলে কোথাও ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে আমাদের ক্ষমার
দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আপনার ব্যক্তিগত মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে
দিবেন।আজ এ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url