গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় - গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে
প্রিয় শুভাকাঙ্ক্ষী প্রথমে আমার সালাম নিবে আসসালামু আলাইকুম। আপনি নিশ্চয়ই গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় এবং গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে এই বিষয়ে আপনি চিন্তিত ? তাহলে চলুন আমাদের এই আরটিকেল মাধ্যমে আপনি কিভাবে গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় কি তা জেনে নিন। আশা করছি এই আর্টিকেলত থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর পাবেন তাই চলুন আর দেরি না করে জেনেনি গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেল আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আপনিগর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় নিয়ে আর চিন্তা থাকবে না এবং গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জেনে যাবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা।গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় । গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে
যখন কোন মেয়ে গর্ভবতী হয় তখন সেই মেয়ে থেকে মা হবার জন্য নানা রকম পরিবর্তন দেখতে পায়। গর্ভবস্থায় নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় যার মধ্যে অন্যতম রক্তশূন্যতা। গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার কিছু উপায় আছে তা আজকে আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন। যে সকল খাবার খেলে গর্ভবতী মায়ের জন্য রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধি পাবে শরীরে রক্ত তৈরি হবে এসকল কিছু জানতে পারবেন।একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় শরীর দুর্বল লাগে কেন।
আরো পড়ুনঃ দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়,গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়,গর্ভাবস্থায় বেদানার উপকারিতা, ও গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা হলে কি খাবার খাওয়া উচিত সহ আপনারা গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় সম্পর্কে খুব সুন্দর ভাবে জানতে পারবে তাই চলুন এবারে আলোচনার দিকে যাওয়া যাক।আপনাদের জন্য সুন্দরভাবে নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা হলে কি খাবার খাওয়া উচিত
গর্ভকালীন এমন এক সময় এই সময়ে শরীরে রক্ত সঞ্চলন ঠিক না থাকলে বাচ্চার সঠিক বৃদ্ধি হয় না। এতে বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাচ্চা যখন মায়ের গর্ভে থাকবে তখনই মাকে আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
গর্ভবতী নারীকে আয়রন সমৃদ্ধ সকল খাবার গর্ভকালীন সময়ে শুরু থেকে খাওয়াতে হবে। গর্ভবতী নারীর রক্তশূন্যতা হলে কচু শাঁক, কাঁচা কলা,লাল শাক পেয়ারা, সিম, মটরডাল, বাঁধাকপি,কলিজা, গোসত, খোলসসহ মাছ যেমন: চিংড়ি মাছ ইত্যাদি খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে গর্ভবতী নারীর।
আরো পড়ুনঃ ডায়রিয়া হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস পর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রক্তের জন্য আয়রন ট্যাবলেট খেতে হয়। আয়রন শরীরে গেলে সেটা থেকে রক্ত তৈরি হয়। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে গর্ভবতী নারীকে কারণ ভিটামিন-সি খাবার থেকে রক্ত তৈরি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে সেই সময় যা করতে হবে -
- শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি জন্য লোহা সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই লোহা থেকে শরীরে রক্ত উৎপাদন হয়।
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে শরীরে রক্ত তৈরি হয় যেমন:মুরগী কলিজা, লালশাক, কচুশাক,লাল মাংস, চিংড়ি, পালংশাক, বেদেনা,খেজুর ইত্যাদি থেকে প্রচুর আয়রন পাওয়া যায়।
- গর্ভাবস্থায় তিন মাসের পর থেকে ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে আয়রন ঔষধ সেবন করতে হবে তাহলে রক্তের সঞ্চলন ঠিক থাকে।
- যদি অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চলন কমে যায় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শরীরে রক্ত দিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
একজন গর্ভবতী মায়ের রক্ত সঞ্চলন এই সময় বৃদ্ধি পায়। সেই জন্য গর্ভবস্থায় নারীর শরীরে রক্ত পরিমাণ সঠিক থাকা দরকার।শরীরে রক্ত কম হওয়া যাবেনা এতে বাচ্চা সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভবস্থায় হিমোগ্লোবিন নারীর শরীরে ১৩-১৬ মিলিগ্রাম হিমোগ্লোবিন থাকা দরকার।গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ সরিষার তেল মালিশের উপকারিতা
যখনি এর থেকে কম থাকে তখন বাচ্চা সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারেনা। তখন বাচ্চা ক্ষতি হবে তাই গর্ভবতী নারীদের শরীরে রক্ত দিতে বলে। মায়ের শরীর থেকে বাচ্চা রক্ত পায় এবং বেড়ে উঠে তাই সেই সময় গর্ভবতী নারীকে এমন সকল খাবার খাওয়াতে হবে যেন হিমোগ্লোবিন পরিমাণ কম না হয়। মা থেকে শিশুর বৃদ্ধি হয় এবং সুস্থ স্বাভাবিক শরীর তৈরি হয়।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে
যখন থেকে একজন নারী গর্ভবতী হয় তখন থেকে নারীর খাদ্য তালিকায় সুষম খাদ্য রাখতে হবে। খাদ্য তালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার শুরু থেকে খেতে হবে। তাহলে রক্ত বৃদ্ধি পাবে এবং শরীরে রক্তের সরবাহ ঠিক থাকবে। গর্ভবতী নারীর আয়রন খাবার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তিন মাসের পর থেকে আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে। আয়রন ট্যাবলেট গর্ভবস্থা তিন মাস থেকে খাওয়া শুরু করলে গর্ভবতী নারীর রক্ত বাড়ে শরীর সুস্থ থাকে।
গর্ভবস্থায় রক্তের সঞ্চলন ঠিক রাখা সবচেয়ে বেশি জরুরি। আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট দেয় ডাক্তার সেটা খাওয়া ফলে রক্ত বৃদ্ধি পায়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন কচুশাক, লালশাক, কাঁচা কলা, পালংশাক, কলিজা, খোসাসহ মাছ, খেজুর, বাঁধাকপি, সিম, পেয়ারা ইত্যাদি খাবারে আয়রন থেকে রক্ত উৎপাদন হয়।
গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়
- যদি গর্ভবস্থায় রক্তশূন্যতা দেখা দেয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে।
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন: কলিজা, লাল মাংস, লালশাক, কচুশাক, সিম, বাঁধাকপি, কাচা কলা, খোসাসহ মাছ, খেজুর, পেয়ারা ইত্যাদি খাবার খেতে হবে। এসকল খাবার থেকে শরীরে রক্ত উৎপাদন হয় এবং রক্তশূন্যতা দূর হয়।
- গর্ভবস্থা তিন মাস পর থেকে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে ডাক্তার পরামর্শ দেয়। আয়রন ট্যাবলেট খেলে শরীরে রক্ত বৃদ্ধি পায়।
- রক্ত উৎপাদন ঠিক রাখার জন্য লোহা জাতীয় খাবার খেতে হবে তাহলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।
গর্ভাবস্থায় বেদানার উপকারিতা
যখন কোন নারী গর্ভবতী হয় তখন সেই নারীকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জন্য বলা হয়। গর্ভবতী নারীর জন্য খাবার তালিকা তৈরি করে খাবার ও ফল খাওয়াতে হবে তাহলে সুস্থ শিশু জন্ম হবে। গর্ভবতী নারীর রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধি করে সেই সকল ফল খাবার তালিকায় রাখতে হবে যেমন বেদানা। বেদানা মধ্যে ৪০% ভিটামিন-সি রয়েছে যা থেকে রক্ত তৈরি করা যায়। গর্ভবতী নারীর জন্য খুব উপকারী খাবার বেদানা।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
বেদানা মধ্যে পটাশিয়াম, ফাইবার, ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই ইত্যাদি থাকে বেদানায়। তাই গর্ভবতী নারীকে প্রতিদিন একটা বেদানা খাওয়ালে তার রক্তের চাহিদা মেটাবে। শরীর নানা পুষ্টি পূর্ণ করবে বেদানা। জাম বা আঙ্গুর সাথে তুলনায় বেদানা মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে।
গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়
ডান দিকে পাশ করে ঘুমালে শিরার উপর চাপ পড়ে যার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চলন ব্যাহত হয়। এতে শিশুর জন্য ক্ষতি করে। শিশুকে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় পেট যেন বাড়তে পারে সেই জন্য রক্ত সঞ্চলন স্বাভাবিক থাকা দরকার। যার ফলে শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয় জেনে নিন
গর্ভবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে সমস্যা হয় তাই এই সময় সোজা হয়ে সুয়ে থাকতে বলে ডাক্তার। এছাড়া বাম দিকে পাশ করে ঘুমালে হার্টে রক্ত পাম্প করবে যার ফলে রক্ত ও পুষ্টি শরীরে সকল অঙ্গ প্রত্যাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এতে শিশু গর্ভে ভালোভাবে পুষ্টি পায় ও সঠিক বৃদ্ধি পায়।
গর্ভাবস্থায় শরীর দুর্বল লাগে কেন
যখন কোন নারী গর্ভবতী হয় সেই সময় থেকে শরীরে হরমোন পরিবর্তন হয়। শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল নিঃসৃত হয় যার ফলে শরীর দূর্বল লাগে। শারিরীক নানা রকম পরিবর্তন ফলে শরীরে দূর্বলতা আসে। গর্ভবতী নারী নানা সমস্যা মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, বমি ইত্যাদি সমস্যা হয়।খাবার ঠিক ভাবে খেতে পাবেনা তখন আরো শরীর দূর্বল হয়ে যায়।
খাবার প্রতি অনীহা দেখা দেয় এতে পুষ্টি সরবরাহ কমে যায়। পেসার লো হওয়ার ফলে দূর্বলতা হয়। দূর্বলতা দূর করার জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। বেশি দূর্বলতা হলে ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে। এই সময় যে কোন ঔষধ সেবন করা যায় না তাই যে কোন ঔষধ খাওয়া আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শেষ কথা: গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়
গর্ভবস্থায় পুরো সময় গর্ভবতী নারীর যত্ন করতে হবে কারণ মায়ের শরীরে পুষ্টি থেকে শিশুর গঠন তৈরি হয়। সুস্থ মা থাকলে বাচ্চা সুস্থ সবল হবে। গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় এবং গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে সম্পর্কে জানতে পারলেন। কোন খাবার খেলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্ত উৎপাদন হয় সে সকল বিষয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল ছিল। আশা করি সবার ভালো লেগেছে।
নিশ্চয়ই আমাদের এই আর্টিকেল আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই এমন আরো অনেক টিপস টিকস জানতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আর্টিকেল শেয়ার করুন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url