জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন - জামদানি শাড়ি চেনার উপায়
জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন এবং জামদানি শাড়ি চেনার উপায় সম্পর্কে
আপনি কি জানতে চান?তাহলে আপনি এই পোস্টটি পড়ুন কেননা আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে
আপনাদের সাথে শেয়ার করব জামদানি শাড়ি আমাদের গর্ভের বস্তু কেন ও জামদানি শাড়ির
দাম এবং জামদানি শাড়ি চেনার উপায় সহ বিস্তারিত শেয়ার করব।তাই আপনি যদি জামদানি
শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি
করুন।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে
পড়েন তাহলে আপনিও জানতে পারবেন জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন এবং
জামদানি শাড়ি চেনার উপায় সে সম্পর্কে।তাই আপনি কোথাও ঘোরাঘুরি না করে আমাদের এই
আর্টিকেলটি পড়ে ঝটপট করে জেনে নিন জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন।
কনটেন্ট সূচিপত্র:জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন-জামদানি শাড়ি
চেনার উপায়
সূচনা: জামদানি শাড়ির বৈশিষ্ট্য এবং জামদানি শাড়ি চেনার উপায়
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জেনে নিব শাড়িতেই নারী নারীদের সবচেয়ে
পছন্দের শাড়ি জামদানি শাড়ি সম্পর্কে।জামদানি শাড়ি সম্পর্কে আপনাদের মনের মধ্যে
অনেক প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করতেছে কিন্তু আপনারা সেই সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন
না।তাই আপনি আমাদের পোস্টটি একটু মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ
ছাত্র জীবনে সময়ের গুরুত্ব কি ?
তাহলে আপনিও জামদানি শাড়ির বৈশিষ্ট্য, জামদানি শাড়ির কাউন্ট কি,জামদানি শাড়ি
যত্ন, জামদানি শাড়ির ইতিহাস, জামদানি শাড়ি চেনার উপায় সহজ জামদানি শাড়ি
আমাদের গর্বের বস্তু কেন। তাই আপনি যদি মনে করে থাকেন জামদানি শাড়ি কিনবেন তাহলে
অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি পড়ে তারপরে আপনি জামদানি শাড়ি ক্রয় করুন।কেননা
বর্তমান সময়ে জামদানি শাড়ি নামে মার্কেটে অনেক প্রতারণা হচ্ছে।এই জামদানি শাড়ি
সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জেনে নিন এবং নিশ্চিন্তে জামদানি শাড়ি ক্রয় করুন।
জামদানি শাড়ির বৈশিষ্ট্য
মুসলিম শাড়ী ও জামদানি শাড়ির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়
না।জামদানি ও মুসলিম শরীফ কমবেশি একই প্রজাতির। মুসলিম থেকে জামদানি শাড়ির
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হল এর পাড় বুননে ব্যবহার করা হয় অসংখ্য সুতা ও মোটা যা দেখতে
সৌন্দর্যময় লাগে এবং চমৎকার লাগে। জামদানি শাড়ির বৈশিষ্ট্যমূলক জ্যামিতিক
প্যাটার্নের ধারাবাহিকতায় যারা ইরানে প্রভাবে প্রভাবিত যাতে করে বুনোনের সময়
কাপড় খুব সুন্দর ভাবে বসে যাই সে কারণে।
জামদানি শাড়ির বুনন ও নকশার কারণে জামদানি শাড়ি ঐতিহ্য বিখ্যাত। জামদানি শাড়ির
পাড় গুলো বেশ কারুকার্যকচিত। জামদানি শাড়িতে বিভক্ত করা হয়েছে যেমন বুট জাল ও
তেছড়ি।জামদানি শাড়ি দিয়ে ব্যবহৃত জনপ্রিয় হলো শাপলা সিঙ্গাড়া,ফড়ং ফুল, বেলপাতা
ইত্যাদি। নকশা অনুযায়ী বিভিন্ন জামদানি বিভিন্ন নামে পরিচিত রয়েছে।
যেমন প্রজাপতি পাড়, চালতা পাড়,বুটিজাল,শামুক বুটি, কচি পাড়, চন্দ্রপাড়, বাঘনলি,
কচুপাতা,তরছা,জালার, এবং বর্তমানে জামদানি শাড়ির জমিনে ব্যবহার করা হচ্ছে পদ্ম
ফুল, গোলাপ ফুল, সাবুদানা, আদার ফানা, কলার ফানা,ইত্যাদি নকশা আঁকা হয়।
জামদানি শাড়ির দাম
সামনে আসছে নতুন বছর এবং ঈদুল ফিতর তার সাথে পহেলা বৈশাখ এমনকি আপনি যে কোন
অনুষ্ঠানে উৎসবে পূজোই এই জামদানি শাড়ি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ সহিত।আপনার সামনের
শুভ দিনগুলোর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।নারীর জীবনে জামদানি শাড়ি কেবল
আপনার পছন্দের তালিকায় রাখলেই চলবে না জামদানি শাড়ি দাম সম্পর্কে আপনাদের জানতে
হবে।
এবং জামদানি শাড়ি কেনার আগে কোনটি খাঁটি জামদানি এবং কোনটি নকল জামদানি শাড়ি সে
সম্পর্কে জেনে নিলে মার্কেটে গিয়ে আপনাকে আর কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না।বর্তমান
সময়ে জামদানি শাড়ি কম দাম থেকে শুরু করে লাখ টাকার উপরে বাজারে এভেলেবল পাওয়া
যাচ্ছে। তাই আপনি কেমন দামে জামদানি শাড়ি নিতে চান সে সম্পর্কে আপনাদের জন্য
কিছু জামদানি শাড়ির দাম উল্লেখ করলাম। তাই চলুন আজকে আমরা জেনে নেব জামদানি
শাড়ির দাম।
আরো পড়ুনঃ বন্ধুর জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস ২০২৩
মেয়েদের জন্য নীল রংয়ের সিল্ক মুসলিম জামদানি শাড়ি এবং ফ্যাশনে এবেল শাড়ি
পনেরশোত পঞ্চাশ টাকা।এবং আপনারা যারা যারা ভাবছেন যে আমদানি শাড়ি কিনবেন তারা
দারাজ ডটকম থেকে বা আড়ং থেকে কিনতে পারেন। আসলে আমরা যদি জামদানি শাড়ির দাম
আপনাদের শুধু উল্লেখ করি তাহলে আপনারা জামদানি শাড়ির না দেখে দামটি প্রমাণ করতে
পারবেন না তাই নিচের এই দুইটি ওয়েবসাইট থেকে আপনার পছন্দ মত জামদানি শাড়ি কিনে
নিতে পারবেন
- Daraz.com
- Arong.com
এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার নিকৃষ্ট মার্কেট থেকে জামদানি শাড়ি কালেকশন করতে
পারবেন তবে আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি জামদানি
শাড়ি চেনার উপায় সহ জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন জানতে পারবেন তাই
আপনি কোথাও না গিয়ে মনোযোগ সহকারে আমাদের পোস্টটি পড়তে থাকুন।
জামদানি শাড়ির ইতিহাস
জামদানি শাড়ির আদি স্থান বা জন্ম স্থান বলা হয় ঢাকায়।জামদানি শাড়ি ঢাকা জেলার
সোনারগাঁও তিতাবাড়ি বাজিতপুর অঞ্চলে একটু সময় তৈরি হতো জামদানি শাড়ি।বংশ
পরস্পরাই কয়েক পুরুষের হাত ধরে এভাবে একের পর এক নকশার নৈপুণ্য ইতিহাসের ঠাঁই
অর্জন করে নিয়েছে জামদানি শাড়ি।জামদানি শাড়ির আনুমানিক উল্লেখ পাওয়া যায় 300
খ্রিস্টাব্দে কৌটিল্য রচিত অস্ত্রশস্ত্র গ্রন্থে।
মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক খ্রিস্টীয় ও চতুর্দশ ও শতাব্দীতে ইবনে বতুতা তার
বর্ণনায় জানাই বাংলাদেশের সুক্ষ শ্রুতির কাপড়ের প্রশংসা করেন। সম্রাট
জাহাঙ্গীরের আলমে উৎকৃষ্ট শুকনো মসলিনের দাম ছিল তখনকার হিসেবেই প্রায় 400 টাকা
সপ্তদশ শতাব্দীতে কুর্ত্তা র্শেরওয়ানি ব্যবহার ছিল জামদানি শাড়ির নকশা।
উৎকৃষ্ট ধরনের জামদানি মস্তি তৈরির জন্য ঢাকা সোনারগাঁও আশেপাশে এলাকাগুলো বেশ
কৌশিকদা ছিল ইউরোপীয় ছাড়া ইরানিয়া আমেরিকান মুঘল জামদানি শাড়ি তৈরির মেন
কারখানা ছিল। বাংলার লোক শিল্প পরিমণ্ডল বস্ত্র জগতে সিল্ক এবং মসলিন পরেই
জামদানি শাড়ি। বুনন তাতে বুটি গুটিতলা মসলিনর নামি জামদানি শাড়ি।
আপনাদের যদি একটু বিশ্লেষণ ভাবে বলতে চাই তাহলে জাম এক প্রকার মদ এবং দানি অর্থে
পেয়ালা অর্থাৎ বঙ্গানুবাদ করলে অথবা ভাবানুবাদ মদের পেয়ালা শব্দ দুটি ফারসি।তাই
ফাঁসি হবে জামা অর্থ কাপড় এবং দামি অর্থ বুটিদার। তাই এটি একসাথে সংযোগ করলে হয়
বউয়ের জমির জামদানি বুটিদার কাপড়।
১৮৪০ সালে জেমস টেইলার তার রচিত টপোগ্রাফি অফ ঢাকা গ্রন্থে বলেন সম্ভবত ভাবে
মুসলমানরই জামদানি শাড়ির বুনন অধিকতর প্রচলিত করেন এবং জামদানি শাড়ি তৈরি
প্রস্তুত করন এখনো চলমান রয়েছে।জামদানি শাড়ি শেষ সময়ে মসলিনের বিকল্প হিসেবে
বিবেচিত ছিল।
তাই জামদানি শাড়ির নকশা বুটে তাতে রেখেই তোলা হয় ১৭৮০ সালে সময়কালে জামদানি
দেখতে চাইলে জাদুঘরে যেতে বলা হত।বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর অষ্টদশ ও 19 বিন শতকে
তৈরি করা কয়েকটি জামদানি শাড়ি সংরক্ষণ করে রাখে। দিল্লির প্রদর্শনীতে ঢাকার
চারটি জামদানি শাড়ি প্রদর্শিত করেন ১৯০২ থেকে ১৯০৩ সালে।
এছাড়াও জামদানি শাড়ি সম্পর্কে কাহিনী গল্প কাহিনী এবং বিখ্যাত লেখকদের কথা ও
মন্তব্য রয়েছে যার দুই বা একটি উল্লেখ করা যেতে পারে নিচে পড়ে নিন। ওয়াটসন
বলেন জটিল নমুনার জন্য এ বস্ত্র ঢাকার তাঁতিদের সবচেয়ে অধিক বহুল জামদানি কারিগর
অবস্থান ছিল বয়ান শিল্পীদের শীর্ষে। বাদশা আউরঙ্গজেব ছিলেন জামদানি শাড়ির একজন
বিশেষ গুনগ্রাহী এবং তার এবং তার জন্য তার জন্য সে সময় জামদানি শাড়ির
প্রত্যেকটি বস্তের মূল্য ছিল 31 পাউন্ড।
এছাড়াও জামদানি শাড়ির জন্য মুর্শিদাবাদের নবাবরা ও জামদানি শাড়ি পৃষ্টপোষক
ছিলেন। এছাড়াও জামদানি শাড়ি শীতের ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫৬
পাউন্ড পর্যন্ত। নায়েব নাজিম মোহাম্মদ রেজা খান প্রত্যেকটি জামদানি শরীরের মূল্য
৪৫০ টাকা হিসেবে পরিষদ করতেন।
জামদানি শাড়ির যত্ন
মোট অতীত থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে এবং আবহমান কাল ধরে অধিকাংশ নারীর পছন্দের
শীর্ষে জামদানি শাড়ি।জামদানি শাড়ির প্রতি বাড়তি আকর্ষণের কারণ অপূর্ব কারোসাজে
সজ্জিত নকশাও মিহি সুতা দিয়ে তৈরি জামদানি।জামদানি শাড়ির ভাঁজে ভাজে যেন শুধু
সুতার বুননে মিশে আছে অজস্র গল্প আর রূপকথা।
বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক জিআই পূর্ণ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো 2016 সালে।
সঠিকভাবে জামদানি শাড়ি যতনা করতে পারলে জামদানি শাড়ি সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে
পারে। বুনন খুব মিহি হয় বলে বাড়তি যত্ন ও খেয়ালের প্রয়োজন হয় জামদানি শাড়ির
রক্ষণাবেক্ষণে।
জামদানি শাড়ি কিনার পরেই আপনার কাজ হবে জামদানি শাড়ি পাড়ে ফলোস লাগিয়ে
নেওয়া।জামদানি শাড়িতে ফলোস লাগিয়ে নিলে পাড় গুলো ভাজ হয় না আর কুচি গুলো অনেক
সুন্দর থাকে।
পানি থেকে সাবধান জামদানি শাড়ি
আপনি কিন্তু চাইলেই অন্যান্য শাড়ির মত করে জামদানি শাড়ি সাবান এবং পাউডার দিয়ে
পরিষ্কার করতে পারবেন না বরং জামদানি শাড়িকে সব সময় নতুনের মত রাখতে হলে পানি
থেকে দূরে রাখতে হবে কারণ জামদানি শাড়ি তৈরির সময় যে মার ব্যবহার করা হয় তাহলে
পানি লেগে সেখানে সীতার গুনন গুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তাই
জামদানি শাড়ি সহজেই নষ্ট হয়ে যায়।
যেকোনো দামি শাড়ি পরিচ্ছন্নতা বলতে অনেকের মাথায় ডাই ওয়াশের বিষয়টি আগেই আসে
কিন্তু জামদানি শাড়ি কোনভাবেই ড্রাই ওয়াশ করা যাবে না।কেননা ড্রাই ওয়াশের পর
জামদানি শাড়ি আইরন করা হলে এটা করে জামদানি শাড়ির বলুন নরম হয়ে নষ্ট হয়ে
যায়। তাই জামদানি শাড়ি ধর একমাত্র সহজ উপায় হল কাটা ওয়াশ।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী সিল্ক শাড়ির দাম কত জানুন
আপনার যদি কোন পছন্দের শাড়ি নষ্ট হয়ে যায় এবং ফ্যাকাসি হয়ে যায় তাহলে আপনি
কাটাও আসে দিতে পারেন মনে রাখতে হবে শুধুমাত্র যারা জামদানি শাড়ি তৈরি করে তাদের
কাছে এই কাঁটা ওয়াশ দিতে হবে। কেন কাঁটা ওয়াশ একমাত্র জামদানি শাড়ি প্রস্তুত
করা ব্যক্তিরায় জামদানি শাড়ি কাটা ওয়াশ করতে পারে।
জামদানি শাড়ি রোদে দেওয়া
অনেকদিন ধরে জামদানি শাড়ি আলমারির কোন কোণে পড়ে থাকলে তাতে আশটে একটি গন্ধ বের
হয়।তাই এই অবস্থা থেকে শাড়িকে রক্ষা রাখতে মাঝে মাঝে শাড়িকে রোদে শুকিয়ে নিতে
হয়।শুধুমাত্র রোজা দিলেই হবে না শাড়ি কে উল্টোপিঠে রোদে দিতে হবে ।এছাড়াও যদি
কোন কারণে বৃষ্টির ভালো থাকেন পানি পড়ে তাহলে রোদে শুকিয়ে নেয়া উচিত এতে করে
শাড়ি ভালো থাকে।
শাড়ি শুকিয়ে নেওয়ার পর শাড়িকে সঠিক ভাঁজ করে পুনরায় আলমারিতে রেখে দিতে হবে
তবে আলমারিতে রাখার পূর্বে আপনাকে হ্যাঙ্গারের সাথে শাড়ির দুপাশ ভাঁজ করে
ঝুলিয়ে দিতে হবে আপনার শরীর অনেকদিন যাবত ভালো থাকবে।
জামদানি শাড়ি চেনার উপায়
কথায় আছে না শাড়িতেই মানায় নারীদের।নারীদের সৌন্দর্যের একমাত্র পথিক হলো শাড়ি
আর এই বাঙালি নারীরা তাদের ব্যবহারিত প্রিয় শাড়িকে পছন্দের তালিকায় রেখেছে
জামদানি শাড়ি।নান্দনিক ডিজাইন বুনন সুতার ম্রিশ্রেণে এই জামদানি শাড়ি অভিজাত্য
রুচিশীলতা দুটি বিষয়ে জড়িয়ে রয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী নকশা পূরণ করার কারণে 2016 সালে ইউনেস্কো জামদানি কে বাংলাদেশের
ভৌগলিক দিকনির্দেশক জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন।কিন্তু বর্তমান সময়ে
মার্কেটে ইন্ডিয়ান জামদানি মেশিনের জামদানি নামে বিভিন্ন জামদানি শাড়ি বিক্রয়
করা হচ্ছে কখনো কখনো ক্রেতা ঐতিহ্যবাহী ঢাকার জামদানি শাড়ি বলে ক্রয় করে
নিচ্ছেন।
অনেক বিক্রেতা জামদানি বলে ভারতীয় পটল টাঙ্গাইলের তার পাবনা ও রাজশাহী সিল্ক
শাড়িকে তাদের হাতে তুলে তুলে দেন এতে করে প্রতারণা হচ্ছে ক্রেতারা।তাই আসন জেনে
নিই জামদানি শাড়ি চেনার উপায়। শাড়ি কেনার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে তিনটি বিষয়ে
গুরুত্ব দিতে হবে শাড়ির দাম সুতার মান এবং কাজের সূক্ষ্মতা।
আসল জামদানি শাড়ি দাদিরা হাতে তৈরি করেন তাই এগুলো তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য ও
সময় সাপেক্ষ বিষয় তাই জামদানি শাড়ির দাম অন্যান্য শাড়ির দামের তুলনায় অনেক
বেশি হয়ে থাকে। মনে করেন একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে দুজন কারিগরের প্রয়োজন
হয় তারা প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পরিশ্রম করেন তাহলে ডিজাইন ভেদে পুরো শাড়ি
তৈরি করছে তাদের সময় লেগে যায় সাত থেকে ছয় মাস পর্যন্ত।
সাধারণত গাড়ি তৈরির সময় অনুযায়ী সুতার মান ও কাজের দক্ষতা বিবেচনায় একটি
জামদানি শাড়ির দাম ৩০০০ টাকা থেকে এক লাখ টাকা হতে পারে এবং তার চেয়ে বেশি হতে
পারে। জামদানি শাড়ি হাতে ভোনার কারণে জামদানি শাড়ি ডিজাইন খুব শুকনো নিখুঁত হয়
ডিজাইন গুলো হয় মিশ্রণ কারিগরি প্রতিটি সুতা হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলুন করে
থাকে।
জামদানি শাড়ি কোন অংশ বের হয়ে থাকে না। এজন্য জামদানি শাড়ি কোনটা এপারের অংশ
এবং কোনটি ওই পাশের অংশ তা বোঝা অনেক কঠিন। এছাড়াও জামদানি শাড়ির কোনটা সামনের
অংশ এবং কোনটি ভিতরের অংশ তা বোঝা অনেক কঠিন। মেশিনে বোনাস শাড়িতে কেবলমাত্র
জামদানি শাড়ির হুবহু নকশাগুলো তুলে ধরা হয় এই শাড়িগুলোর উল্টো পিঠের সুতা গুলো
কাটা কাটা অবস্থায় বের হয়ে থাকবে।
জামদানি শাড়ি চেনার আরেকটি উপায় হতে পারে সুতা ও শাড়ির মিশ্রণেতা যাচাই করা
।জামদানি শাড়ির বরণে সুতি ও সিল সুতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে ব্যবহারের দিক থেকে
জামদানি শাড়ি মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে।যেমন:
ফুল কটন জামদানি: যেটা তুলার সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় সেটা ফুল কটন
জামদানি শাড়ি
হাফ সিল্ক জামদানি: যেখানে ব্যবহার করা হয় আড়াআড়ি সুতা গুলো রেশনের আর
লম্বা-লম্বি সুতা গুলো হয় তুলার।
ফুল শিল্পী জামদানি: ফুল সিল্ক জামদানি শাড়ির দুই প্রান্তে সুতার রেশমের
হয়ে থাকবে।
তাই আপনারা যারা জামদানি শাড়ি কিনবেন ভাবছেন তারা শাড়ি কেনার আগে সুতা
সম্পর্কিত নিশ্চিত কেননা নকল জামদানি শাড়ি সিল্কের পরিবর্তে পলেস্টার বা নাইলনের
সুতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে সে কারণে সুতার মান যাচাই করে শাড়ির আঁচলের শেষ
প্রান্তে কিছু সুতা বের হয়ে থাকে সেগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে যাতে করে আপনারা
স্যারের আসল না করে তফাৎ গুলো বুঝতে পারেন।নাইলনের সুধা হয় মসৃণ আর জামদানি সিল
সুতার মার দেওয়াই থাকে ঢাকায় সেটা হবে অপেক্ষাকৃত অমৃসণ।মনে রাখবেন জামদানি
শাড়ির সুতা যাত চিকন কাজের মান তত শুকনো হবে।যা ভালো মানের জামদানি শাড়ির একটি
বৈশিষ্ট্য।
জামদানি শাড়ির কাউন্ট কি
জামদানি শাড়ি মূলত কার্পাস তুলা দিয়ে প্রস্তুতকৃত এক ধরনের পরিধান করা ব্রস্ত্র
যার বয়ন পদ্ধতি অনন্য। জামদানি শাড়ি বুননকালে তৃতীয় একটি সুতা দিয়ে নকশা
ফুটিয়ে তোলা হয় মুসলিম বয়োনি যেমন পক্ষে ৩০০ কাউকে সুতা ব্যবহার করা হয়।আর
জামদানি শাড়ি গয়নে সাধারণত ২৬ ৮০ ৮৪ কাউন্টার সুতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সাধারণভাবে আসল ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি ৪০ কাউন্ট দিয়ে ভুনা শুরু করে তাতিরা।
এমন ধরনের শাড়ি মূলত বাজারে অ্যাভেলেবেল ৪০ এবং ৬ কাউন্টের জামদানি শাড়িগুলো
অনেক সময় আবার ৮৪ ও১২০ পাউন্ড সুতাই ব্যবহার করা হয়।তখন আপনি এটির মান দেখে
আনুমানই করতে পারবেন না অনেকটা। জামদানি শাড়ির ডিজাইন ও কাউন্টের উপর নির্ভর করে
শাড়ির দাম।ডিজাইন বা কাউন্ট বেশি হলে এটি তৈরি করতে বেশি সময় লাগে তখন জামদানি
শাড়ির মূল্য একটু বেশি হয়।
জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন
বাংলাদেশের জামদানি শাড়ির ঐতিহ্য কে সমকালীন এক শিল্পধারায় প্রবাহিত করে
দিয়েছে আড়ং। জামদানি শাড়ি ছিল দেশি ঐতিহ্য বিকাশের আড়ং এর পক্ষ থেকে পরিচালিত
করা এক অসাধারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। পরবর্তী সময়ে জামদানি বুনন শিল্প ২০১৩ সালে
৪ ই ডিসেম্বর ইউনেস্কোর এক ইনট্যানজিবল কালচার হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি হিসেবে
স্বীকৃতি অর্জন করেন।
নকশাই ও গুণন পদ্ধতির বিশেষত্বের কারণে জামদানি শাড়ি অন্যান্য সব শাড়ির তুলনায়
সবচেয়ে আলাদা।শাড়ি প্রেমীদের কাছে জামদানি শাড়ির মূল্য অনেক বেশি।তবে জামদানি
শাড়ি শিল্পীর বিকাশ বা ব্যপ্তি তত বেশি নয়।জামদানি শাড়ি বলতে শুধুমাত্র
জামদানি শাড়ি কেই বোঝানো হয়।বাঙালি নারীদের সবচেয়ে পছন্দের শাড়ি হল জামদানি।
মুসলিম ও জামদানি আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য আভিজাতের এক ঐতিহ্য প্রতীক। বিশ্বের
নানা দেশে পোশাকের ইতিহাস রয়েছে তবে এ বিষয়ে আলোচনায় মুসলিমের পাশাপাশি
জামদানি শাড়ি বিশেষভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। জামদানি শাড়ি কখন এবং কোন সময় থেকে
তৈরি করা হয় তাই স্পষ্টভাবে এখনো জানা যায়নি।তবে অনেক ঐতিহ্য ও গবেষক মনে করেন
আজকের এই জামদানি বিশ্বখ্যাত মুসলিমের উত্তরাধিকার হিসেবে অর্জিত করেছে।
পাতলা ও সাদা রংয়ের মসরিনের খ্যাতি ছিল বিশ্বজুড়ে।তবে অতীতে ঢাকা সোনারগাঁও
ধামরা বাজিতপুর প্রবাহিত অঞ্চলে মুসলিমের জন্য অনুলিপি ছিল।একই সময়ে এই বস্তরম ও
চীনে রপ্তানি করা হতো যার কারণে আরব, আমিরাত , ইরান, মালয়ী, জাভা,
আর্মেনিয়া,প্রভৃত দেশ থেকে ব্যবসায়ী এ দেশে আসতে মুসলিম শাড়ি কেনার জন্য। মুঘল
আমলে সময়ে এ শাড়ির বেশি চাহিদা ছিল।
জামদানি শাড়ির নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মতবাদ করা হয়েছিল মনে করা হয়
মুসলমানেরাই ভারত উপমহাদেশের জামদানি শাড়ির পরিচালনা বিস্তার করে করে । লোক
শিল্প বিশারদ তফায়েল আহমেদের মতে জামদানি শাড়ির অর্থ বুটিদার কাপড় ফারসি শব্দ
জামা।অর্থাৎ জামা কাপড় আর দানা মানে বুটি। ইতিহাসের এক তথ্য থেকে জানা যায়
খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকেও বঙ্গদেশ থেকে মুসলিমের মত সুক্ষ বস্ত্র ইউরোপে রপ্তানি
করা হতো।
জামদানি শাড়িতে কোন রং দিয়ে নকশা করা হয় না তাঁতিদের কল্পনাতে সুনিপুণভাবে
ফুটিয়ে তোলা হয় জামদানি শাড়ি।জামদানি শাড়ি তৈরির জন্য তাঁতিরা খুব
সূক্ষ্মভাবে খুদা দিয়ে হাতে বুনিয়ে জামদানি শাড়ি তৈরি করে।জামদানি শাড়ি নকশা
রাজ্যে হতো তাঁতিরাই করে সে হয়তো সেখানে দেশের প্রকৃতি প্রিয় লতাপাতা গাছ ফুল
চিত্রই বেশি ভূমিকা রাখে।
তবে জামদানি শাড়িতে জ্যামিতিক নকশার ব্যবহার করা হয়। নকশা অনুযায়ী জামদানি
শাড়ি বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন চালতা পাড়,কলস ফুল, মুরালিজাল,জবা ফুল, শাপলা
ফুল,কলকা পাড়,ডুরিয়া,তেরছা,বুটিদার, পান্না হাজার, এরকম হাজারো নামে নকশাইল তৈরি
হয় জামদানি শাড়ি।
জামদানি শাড়ি বলোতো তিন প্রকার হয় ফুল কটন জামদানি, হাফ কটন জামদানি শাড়ি, ফুল
শিল্প জামদানি, হাফ সিল্ক জামদানি শাড়িতে আড়াআড়িভাবে সুতা গুলো রেশমের আর
লম্বালম্বি সুতা গুলো হয় তুলোর তৈরি। আর অন্যদিকে সুতি জামদানি শাড়ি গুলো
সম্পূর্ণ তৈরি হয় তুলোর সুতা দিয়ে।
শীতলক্ষ্যা নদীতে জামদানি শাড়ি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে বিদায় ঢাকার অদূরে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় তারাবো ইউনিয়নের 14টি গ্রাম এবং খিদিরগঞ্জ
ইউনিয়নের একটি গ্রামের মধ্যে জামদানি শাড়ির কারখানা তৈরি হয়।বাংলাদেশের
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের জামদানি শিল্প কি আরো উন্নত এবং এর উৎপাদন
বিপনে সহায়তা করার জন্য তাড়াবোর নোয়াপাড়া গ্রামে জামদানি শিল্প নগরীর এক
গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
জামদানি শাড়ির ঐতিহ্যবাহীকে সমকালীন শিল্প ধারায় প্রচলন করে দিয়েছে আড়ং। এটি
ছিল আড়ং-এর পক্ষ থেকে প্রচলিত এক অসাধারণ সাংস্কৃতিক অভিযান। জামদানি শাড়ি
শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ঢাকা ডেমরা এলাকায় ১৯৭৮ থেকে ১৯৭৯ সাল এটি জরিপ
কার্য পরিচালনা করা হয়। সেই তথ্য থেকে পাওয়া যায় ঢাকার ডেমরা এলাকায় প্রায়
৭০০ পরিবার জামদানি শাড়ি তৈরির কাজ করত।
আর এই ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আড়ং জামদানি শাড়ি নমুনা সংগ্রহের কাজগুলো শুরু করে
দেয়। সে সময়ে গত ২০০ বছরে যতরকম জামদানি শাড়ি তৈরি করা হয়েছে তার সবগুলো
মোটিভ ব্যবহার করে তিনশত জামদানি শাড়ি প্রস্তুত করা হয়।
কিছু কথা : জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন এবং জামদানি শাড়ি চেনার উপায়
শাড়িতেই নারী আর নারীদের সবচেয়ে পছন্দের শাড়ি হল জামদানি।তাহলে প্রিয় পাঠক
বোন আশা করছি আপনি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনি
জানতে পেরেছেন জামদানি শাড়ি আমাদের গর্বের বস্তু কেন এবং জামদানি শাড়ি
চেনার উপায় সম্পর্কে। এছাড়াও আপনি জামদানি শাড়ির ইতিহাস, জামদানি শাড়ির যত্ন,
জামদানি শাড়ির কাউন্ট কি, জামদানি শাড়ির দাম জামদানি শাড়ির বৈশিষ্ট্যসহ
বিস্তারিত আপনারা জানতে পেরেছেন।
এখন নিশ্চয়ই আপনার জামদানি শাড়ি কেনার ক্ষেত্রে জামদানি শাড়ি চেনার উপায় জেনে
সঠিক জামদানি শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনার জামদানি
শাড়ি সম্পর্কিত সকল তথ্যের জন্য অনেক উপকারে আসবে। ফোন ধরে আপনার মূল্যবান সময়
আমাদের সাথে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
এবং আমাদের এই পোষ্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু
বান্ধবী এবং আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।কেননা জামদানি শাড়ির কেনার
আগে আমাদের সকলেরই জামদানি শাড়ি চেনার উপায় গুলো জেনে রাখা প্রয়োজন।যা প্রিয়
পাঠক আজকে অনেক বকবক করলাম আবারও কথা হবে অন্য কোন টপিক নিয়ে সে পর্যন্ত সবাই
ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আমার জন্য দোয়া রাখবেন আসসালামু আলাইকুম।
ঠিকমতো লিখতে না জানলে লেখার কি প্রয়োজন? লেখার কোনো ছিরি ছাদ না থাকলেও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে এই জঙ্গলে।