মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি - মেছতা কেন হয়

প্রিয় পাঠক আপনি কি মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি এবং মেছতা কেন হয় এই বিষয়ে জানতে চান? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আপনি হইতো অনেক ওয়েবসাইট ঘুরাঘুরি করছেন কিন্ত আপনি জানতে চাওয়া প্রশ্নর উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই আপনি যদি এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি জানতে পারবেন মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি। তাই প্রিয় বন্ধরা কোথাও না গিয়ে আপনি আমাদের সাথে থাকুন।
মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি
মেছতা কেন হয় আমরা অনেকি জানিনা আবার মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তাও অনেকে জানি না। তাই আমি আপনাদের আজকে শিখিয়ে দিব মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি এবং মেছতা কেন হয় তাই সম্পর্কে। তাই আপনি যদি মেছতা দূর করা ব্যপারে জানতে চান তাহলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অতি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। কেননা আপনাদের জন্য এই আর্টিকেল স্পেশাল কিছু টিপস রয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি - মেছতা কেন হয়

সূচনা 

প্রিয় পাঠক আমি হয়ত মেছতা নিয়ে অনেক চিন্তায় আছেন। কিভাবে আপনার ত্বকে থেকে মেছতার দাগ দূর করবেন। মেছতার দাগ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি ও মেছতা কেন হয় অনেকে আবার মেছতা দূর করার ঔষধ,এলোভেরা দিয়ে মেছতা দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে এবং তৈলাক্ত ত্বকে মেছতা দূর করার উপায়,পুরুষের মেছতা দূর করার উপায় নিয়ে আমার এই আর্টিকেল আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। তাই কোথাও না গিয়ে আপনি আমার সঙ্গে থাকুন।

চিরতরে মেছতা দূর করার উপায়

অনেকের মেছতা সমস্যা নিয়ে ভুগছেন। মুখের উপরে কালছে একটি আবরণ হয় যাকে মেছতা বলা হয়। মেছতা হলে দেখতে খারাপ লাগে তাই কেউ মেছতা পছন্দ করে না। চলুন জেনে আসি কিভাবে মেছতা চিরতরে দূর করা যায়।
  • এলোভেরা মধ্যে থাকা উপাদান মেছতা দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকারি। নিয়মিত প্রতিদিন যদি এলোভেরা মুখে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এক মাসে মধ্যে মুখের মেছতা দূর করতে পারবেন।
  • আলুর রস মুখে লাগিয়ে রাখলে মুখের কালো দাগ ব্রণের দাগ সাথে মেছতা দাগ সহজে দূর করে। তবে নিয়মিত আলুর রস ব্যবহার করতে হবে চিরতরে মেছতা দূর করতে হলে।
  • পাকা লাল টমেটো খুবই ভালো একটি সবজি যার মধ্যে থাকা উপাদান মেছতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • লেবুর রসে থাকা ভিটামিন-সি খুবই কার্যকারি মুখের মেছতা দূর করার জন্য এটা ব্যবহার করতে হবে। লেবুকে প্রাকৃতিক ব্লীচ বলা হয়।
  • ত্বকজনিত বিভিন্ন সমস্যা মধ্যে মেছতা বেশি দেখা দেয় তবে চিরতরে যদি মেছতা দূর করতে হলুদ ও দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে।

মেয়েদের মেছতা দূর করার উপায়

  • মেয়েদের মেছতা দূর করতে হলুদ গুঁড়া রয়েছে ঔষুধি গুণাগুণ। একটি উপাদান যা শুধু মসলা হিসেবে নয় মুখের মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। হলুদের পেস্ট তৈরি করে মেছতা যে জায়গায় সেখানে লাগিয়ে রাখবেন। নিয়মিত এই পেস্টটি সেই স্থানে লাগিয়ে রাখলে এক সপ্তাহে মধ্যে ফলাফল পাবেন।
  •  মেছতা দূর করতে লেবুর রসের সাথে মধু ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ত্বকে যে স্থানে মেছতা কালো দাগ আছে সেখানে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। মেছতা দূর করতে প্রতিদিন রাতে এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ফলাফল পাওয়া যায়।
  • আলুর রসে থাকা ভিটামিন মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। আলুর রসের সাথে মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। খুব সহজে মুখের ত্বকে কালো দাগ ও ত্বকের লাবণ্য ফিরে আসে।
  •  এলোভেরা জেল বা এলোভেরা মুখে মাখলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এলোভেরা মুখে দিলে ত্বক সুন্দর হয় এবং ত্বকের খসখসে ভাব থাকে না। এলোভেরা মুখে ব্যবহার করতে তাড়াতাড়ি ত্বকে থেকে মেছতা দাগ চলে যায়।
  • পাকা টমেটো মধ্যে থাকা অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। টমেটো রস বের করে মুলতানি মাটি সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিতে হবে। তাহলে ফলাফল পেয়ে যাবেন।

তৈলাক্ত ত্বকের মেছতা দূর করার উপায়

যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত থাকে তাদের ত্বক সব সময় তেল তেল ভাব থাকে এবং মুখে তেল নামায় মুখে ব্রণ, মেছতা মত সমস্যা দেখা দেয়। মুখের তৈলাক্ত ভাব শুধু মেয়েদের হয় এমনটা নয় ছেলেদের ও হয়ে থাকে তৈলাক্ত ত্বক। যাদের তৈলাক্ত ত্বকের মেছতা হয় তাদের কিভাবে মেছতা দূর করতে হয় আজকে সেই বিষয়ে জানব।
মেছতা দাগ দূর করতে লেবুর রস খুবই কার্যকারী উপাদান। প্রায় সকলের বাসায় লেবু থাকে এটির দাম কম। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা লেবুর রসের সাথে মধু ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে দিলে মেছতা জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়। লেবুকে প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে।

আবার হলুদ এমন একটি উপাদান যাকে প্রাকৃতিক ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হলুদের গুড়া সাথে মধু মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে মুখের মেছতা দাগ হালকা হয়ে যায়।

পিঁয়াজের রস মুখের দাগ দূর করার জন্য খুব ভালো। পেঁয়াজের রসের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার ও ভিটামিন-সি যা ত্বকের জন্য অনেক কার্য সাধন করে। তাই পেঁয়াজের রস করে মুখে লাগিয়ে রাখলে মুখ থেকে তেল শোষণ করে নিবে এবং মেছতা দাগ হালকা হয়ে যাবে।

অ্যালোভেরা মধ্যে থাকা ভিটামিন যা ত্বকের প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল ভাবে সুন্দর করে। অ্যালোভেরা নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকে যে কোন দাগ দূর হয়ে যায়। আবার ত্বককে সুন্দর মসৃণ করে তোলে। জীবাণুকে মেরে ফেলে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে অ্যালোভেরা।

মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি

মেছতা দূর করার জন্য কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব। মেছতা অনেকের অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে দেখা দেয়। আবার অনেকের জেনেটিক সমস্যা হয়ে থাকে হরমোনের সমস্যা হলেও মেছতা দেখা দেয়। এই মেছতা দাগ বিভিন্ন বাজারে ক্রিম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে দূর করার চেষ্টা করলে সেই দাগ আরো গাড়ো হয়ে যায়।তাই ঘরোয়া উপায়ে মেছতা দূর করার চেষ্টা করতে হবে। চলুন এক নজরে জেনে আসি মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি।
  • অ্যালোভেরা
  • হলুদ
  • আলুর রস
  • পিঁয়াজ রস
  • টমেটো রস
  • লেবুর রস
  • মুলতানি মাটি ও মধু মিশ্রণ
  • আপেল সিডর ভিনিগার
  • কলার খোসা

পুরুষের মেছতা দূর করার উপায়

ছেলেদের ত্বকে অনেক সময় হরমোন বা জেনেটিক সমস্যা কারণে মেছতা দেখা দেয়। এই মেছতা আবার অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে দেখা দেয়। মেছতা একেবারে ভালো হয় না এটি আস্তে আস্তে হালকা হয়ে চলে যায়। তবে এটায় যদি বাইরে রাসায়নিক পদার্থ বা ক্রিম ব্যবহার করা হয় তাহলে মেছতা দাগ আরো গভীর হয়ে যায়। ছেলেদের অনেকের ত্বক শুষ্ক হয় তাই এই ত্বকে যদি মেছতা পড়ে সেটা দূর করার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
মেছতা দাগ দূর করতে লেবুর রস সাথে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে ১৫/২০ মিনিট। তারপর সুন্দর করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে কিছু দিন ব্যবহার করতে হবে।

কমলা লেবু মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের দাগ তুলতে কার্যকারী। ত্বকের দাগ তুলতে কমলা লেবু খোসা বেটে এর সাথে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে। ১৫/২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে কিছু দিন ব্যবহার করলে রেজাল্ট পাওয়া যাবে।

মেছতা কেন হয়

আমাদের ত্বকের উপরে যখন হালকা বাদামি থেকে কালো রং দেখা দেয় তখন সেটাকে মেছতা বলি। মেছতা কেন হয় তার কারণ হল যখন কোন মানুষ অতিরিক্ত চিন্তা মানসিক চাপে থাকে তখন মুখের উপরে ফুটে বের হয় এই দাগ যার নাম মেছতা। মেছতা শুধু দূশচিন্তা জন্য হয় এমনটা না যাদের জেনেটিক সমস্যা বা হরমোন পরিবর্তন হলে ও মেছতা দেখা দেয়।

মেছতা যদি ত্বকের ওপরের স্তরে হয়ে থাকে তাহলে তাকে এপিডার্মাল মেলাজমা ও ভেতরের স্তরে হলে ডার্মাল মেলাজমা বলা হয়। দুই স্তরে যদি হয় তাকে মিক্স মেলাজমা বলে। মেছতার প্রধান কারণ হচ্ছে জেনেটিক প্রিডিসপজিশন।এছাড়া সূর্যের আলো, চুলার আগুন, গর্ভবস্থা, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ও রাসায়নিক কসমেটিক পণ্য ব্যবহার ফলে মুখে মেছতা দেখা দেয়।

মেছতা দূর করার ঔষধ

মেছতা মুখের উপরে বা ভিতরে অংশে হয়ে থাকে। মেছতা যখন ত্বকের উপরে অংশে হয় এপিডারমাল মেলাজমা বলে আর যে মেছতা ত্বকের ভেতর দেখা দেয় তাকে ডারমাল মেলাজমা। একসাথে যদি ত্বকে ভেতরে বা বাহিরে মেছতা দেখা দেয় তাকে মিক্স মেলাজমা বলা হয়। মেছতা সাধারণত অতিরিক্ত চিন্তা, মানসিক চাপ কারণে ত্বকের উপরে ফুটে উঠে।
ত্বকের রাসায়নিক পদার্থ বা ক্রিম ব্যবহার করে মেছতা দূর করা যাবেনা। এতে মেছতা আরো গভীর হয়ে যায়। মেছতা দূর করতে এখন কিছু ঔষধ বা মলব ব্যবহার করে ফলাফল পাচ্ছে অনেকে। বর্তমানে কেমিক্যাল পিলিং, মাইক্রোডার্মাব্রেশন ও পিআরপি থেরাপি দিয়ে মেছতার চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এতে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়।

শেষ কথাঃ মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি - মেছতা কেন হয়

প্রিয় পাঠক আশা করি আমাদের আজকে আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন মেছতা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি ও মেছতা কেন হয়। আপনাদের মনে মেছতা নিয়ে যত ভাবনা ছিল আশা করি সকল ভাবনা দূর করতে পেরেছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। তাই এমন আরো টিপস ও টিকস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন।আজক এই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url