গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা জেনে নিন সহজেই
আপনি একজন গর্ভবতী আপনার খাবার তালিকায় প্রতিদিনের জন্য সুষম, ভিটামিন
স্বাস্থ্যকর ও গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি খাবার রাখা বিশেষভাবে ভূমিকা পালন
করবে।গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা করতে হবে। এতে গর্ভকালের সময় বাড়তি
চাহিদা নিশ্চিত করে আপনার ও আপনার শিশুর সুস্বাস্থ্য সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে।
গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা করতে হবে এবং সেই নিয়ম মত খাওয়াতে হবে ও
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় তা সম্পর্কে জানতে পারবেন ৷ আপনার গর্ভের শিশুর
উপযুক্ত শারিরিক গঠন ও মেধা বিকাশ নিশ্চিত করার সাথে সাথে বিভিন্ন স্বাস্থ্য
জটিলতা রোধে সুষম খাবার তালিকা মেনে চলা বিশেষ প্রয়োজন।
একজন গর্ভবতী মায়ের সাধারণত ৮ থেকে ১২কেজি ওজন বৃদ্ধি পায়।একজন গর্ভবতী মায়ের
প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ ক্যালরি খাবার খাইতে হবে। এই খাবারের ক্যালরির সাথে
২৮মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১২০০ মিলিগ্রামে এবং ফোলেট ৬০০ থেকে ক্যালরির সাথে ৮০০
মাইক্রোগ্রাম খাবার গ্রহনের প্রয়োজন।গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা
সম্পর্কে এই আর্টিকেল গর্ভবতী মায়ের লক্ষণ দেখার প্রথম মাস থেকে শুরু করে একজন
গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা আলোচনা করা হলো।
আর্টিকেল সূচিপত্রঃ গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা
ভূমিকাঃ গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা
একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকার সাথে কি কি রাখা প্রয়োজন এবং কি
নিয়ম মেনে গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি কর খাবার খাওয়া উচিত তা আপনারা আজকেই এই
আলোচ্য বিষয় থেকে জানতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
ডায়বেটিস রোগীর খাবার তালিকা জেনে নিন
একটি গর্ভবতী মায়ের গর্ভের সময় নানা সমস্যা হতে পারে তাই আপনাদের জেনে রাখা
উচিত গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় ,গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
,গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা , গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার
খাওয়া যাবে না ,গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ, এবং ৬মাসের গর্ভবতী মায়ের
খাবার তালিকা সহ বিস্তারিত জানতে পারবেন।
গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি
স্বাভাবিক ভাবে একটি শিশু মায়ের গর্ভে ২৮০ দিন বা ১০ মাস মাতৃগর্ভে আসতে আসতে
বেড়ে ওঠার পর পৃথিবীর আলো দেখতে পায়।এই সময় বাচ্চার বেড়ে ওঠা সঠিক ভাবে পরিচর্যা
নির্ভর করে একজন মায়ের সঠিক খাদ্য ও পুষ্টির ওপর।গর্ভাবস্থায় খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম
করলে অপুষ্টির অভাবে একদিকে যেমন কম ওজনে শিশু জন্ম গ্রহণ করে তেমনি ভাবে মায়ের
রক্তশূর্ণতা আমিষের অভাবে দুর্বলতা দেখা যায়।তাই গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের সুষম
খাদ্য ও পুষ্টির দিকে নজর রাখতে হবে।
আমিষ: আমিষ জাতীয় খাবার আমাদের সকলের খাদ্য ও পুষ্টির একটি বিশেষ উপাদান।
আমিষের কারণে বাচ্চার সঠিক বুদ্ধি মেধা বিকাশ নিশ্চিতে আমিষের প্রয়োজন। দৈনিক ৮০
থকে ১০০ ক্যালোরি আমিষ খাওয়া দরকার। আমিষের মূল উংস হলো মাছ, মাংস, দুধ,
ডিম,বাদাম, ডাউল ও সিমের বিচি খাইতে হবে।
লৌহঃ লৌহ কি স্বাভাবিক অবস্থায় একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ৩০থেকে ৪০ গ্রাম
লৌহ বা আয়রণ প্রয়োজন হয়। গর্ভকালীন সময়ে প্রতিদিন ৪০ গ্রাম লৌহ যেসব খাবারে পাওয়া
যায় যেমন সবুজ সবজি, কলিজা, শুকনো ফল, কচুর শাক, পালংশাক, টেংরা মাছ, খেজুর, গুড়,
সফেদা ও টক জাতীয় খাবার গুলোতে।
ফলিক এ্যাসিডঃ ফলিক এ্যাসিড সম্পর্কে আপনারা অনেকে জানেন আবার অনেকে জানেন
না ।জানার জন্য জেনে নিন। ফলিক এ্যাসিডে গর্ভবতী মায়ের রক্তসল্পতা দেখা যায় ।
এছাড়া ফলিক এ্যাসিড শিশুর জন্মগত প্রতিবন্ধক্তা প্রতিরোধ করে থাকে। গর্ভবতী
অবস্থার সস্বাভাবিক তুলনার তিনগুন বেশি ফলিক এ্যাসিড খাওয়া উত্তম। যেমন শুকনো
সিমের বিচি, কলিজা, পালংশাক, লেটুস, ডিম, দুধ, ডাল ফলিক এ্যাসিডের প্রধান ।
আরো পড়ুনঃ
ক্যালসিয়ামঃ শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনের জন্য শুরুর মাস থেকে শেষ মাস
পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম খেতে হবে। দৈনিক ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
খাওয়া উত্তম। দুধ ও দই ক্যালসিয়ামের একটি প্রধান উংস। এছাড়া ডাল, বাঁধাকপি, সরিষা
শাক, শালগম, মাছ, বাদাম, কমলা, ক্যালসিয়াম পরিমাণ বেশি থাকে।
গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা
আমরা এই আর্টিকেল মাধ্যমে আলোচনা করবো গর্ভবতী মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা এবং
গর্ভবতী মায়ের জন্য কি কি ফল খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে। আমরা হইতো সবাই জানি যে
গর্ভকালীন অবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।
আরো পড়ুনঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
এমন সময় বাচ্চাকে ভালো রাখার জন্য গর্ভবতী মাকে নানা ধরনের খাবার খাওয়ার প্রয়োজন
হয়, আবার এমন অনেক খাবার আছে যে গুলো থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। এমন সময় ফলমূল
খাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন খাবার খেতে হলে গর্ভবতী
মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা করতে হবে।
গর্ভবতী মায়ের যেসব ফল খাওয়া যাবে
- পেয়ারা
- আমড়া
- কলা
- ডালিম
- কমলালেবু
- আম
- তরমুজ
- আপেল
- কিউই
- নাশপাতি
- আতা
- চেরি
পেয়ারাঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ই , আইসো, ক্যারোটিনয়েড এবং
পলিফেনল থাকাই পেয়ারা খাওয়া অপরিহার্য। পেয়ারা খেলে বাচ্চার মেধা বিকাশ ঘটে।
আমড়া: আমড়ার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আয়রন ও অ্যান্টি এক্সিডেন্ট
থাকে।যার ফলে গর্ভাবস্থায় আয়রণের কমতি হয়না। আমড়া খেলে বাচ্চার দাঁতের মাড়ি শক্ত
হয়।
কলা: কলা আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। কলায় মিনারেল,
ফাইবার, ভিটামিন থাকে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক উপকার।
কমলালেবুঃ কমলা মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও ফাইবার গর্ভবতী নারীদের শরীরে
অনেক উপকার। কমলা থাকে দ্রবণীয় ফাইবার ও এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সহয়তা করে
। কমলার রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
ডালিমঃ ডালিম গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই পুষ্টিকর ও উপকারী একটি ফল।
ডালিমে থাকা হিমোগ্লোবিন যা রক্ত স্বাল্পতা বৃদ্ধি করতে সহয়তা করে।
আমঃ আম খেলে রোগ প্রতিরোধ করে সাহায্য করে। আমে থাকা ভিটামিন-ই, কপার,
ভিটামিন বি, এক ফলেট থাকে তাই গর্ভবতী মায়ের জন্য আম খাইতে হবে। মানবদেহের রোগ
প্রতিরোধ সাহায্য করে।
তরমুজঃ তরমুজে প্রচুর পানি থাকে যা একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে মুখ্য ভূমিকা
রাখে। গর্ভবতী মায়ের এসময় কোষ্ঠকাতাঠিন্য হয়ে থাকে। তাই তরমুজ খেলে
কোষ্ঠকাতাঠিন্য হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
আপেলঃ আপেল খায়লে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে গর্ভবতী
মা নানা প্রকার রোগ বালাই থেকে রক্ষা পায়। আপলে থাকে ফাইবার অ্যান্টি এক্সিডেন্ট
থাকে তাই গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারি।
কিউইঃ আমরা জানি ফল মানবদেহের জন্য উপকারী। ফল মানবদেহের ভিটামিন চাহিদা
পূরণ করে। কিউই ফল ভিটামিন সি ও পটাসিয়ামসমৃদ্ধ স্বাথ্যের জন্য উপকারী। এবং কিউই
ফল খেলে হার্ট ভালো থাকে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
চেরিঃ আমরা জানি চেরি ফল দেখতেই অনেক সূন্দর।কালচে লাল রঙের চেরি ফল খেতে
অনেক সূন্দর। চেরি ফল পেটের চর্বি কমাতে এবং ডায়বেটিস রোগীরা খেতে পারবে।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
গর্ভাবস্থায় যেসকল খাবার খেলে বাচ্চা রং ফর্সা হয়। অনেকে মনে করে খাবার খাওয়া
জন্য বাচ্চা রং হয়ত উজ্জ্বল হয় কিন্তু এটা পুরো ভুল ধারণা। এসময় মাকে পুষ্টিকর
খাবার দেওয়া দরকার। মা ও সন্তানের জন্য পুষ্টির প্রয়োজন হয় বেশি। প্রাচীনকালে
মানুষ মনে করত নারিকেল, দুধ, ডিম, ডাবের পানি,জাফরান, কলা এসব খাবার খেলে বাঁচার
গায়ের রং উজ্জ্বল হয়।
আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় ২০২৩
আসলে এটি পুরো ভুল ধারী কারণ এসব খাবার বাচ্চার পুষ্টির জন্য প্রয়োজন তাই খেতে
বলা হয়। বাচ্চার রং বাবা মায়ের জিন সাথে পরিবর্তন হয়। এটা কোন খাবার দ্বারা তৈরি
হয়না গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা করতে হবে তাহলে বাচ্চা সুস্থ হবে।
জাফরান: আমরা জানি জাফরান শরীরের জন্য খুব উপকারী। এটি গর্ভবস্থায় দুধের
সাথে মিশিয়ে খাওয়া অনেক উপকারী। তবে প্রাচীনকালে মানুষ মনে করত জাফরান দুধে সাথে
মিশিয়ে পান করলে বাচ্চার রং ফর্সা হয়
নারিকেল: নারিকেল সাদা হওয়ার কারণে প্রাচীনকালের মানুষের ভ্রান্তধারণা যে
নারিকেলের সাদা অংশ খাওয়া ফলে বাচ্চা হয়ত গায়ের রং সাদা হবে
দুধ: দুধে থাকা ক্যালসিয়াম বাচ্চা জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু মানুষ ভাবতেন
দুধ সাদা এটা খায়লে বাচ্চার গায়ের রং উজ্জ্বল হবে। এটা ভুল একটি ধারণা
ডাবের পানি : ডাব পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ ও সি যা ত্বকে
জন্য ও শরীর জন্য উপকার করে। তবে আগের মানুষ ভাবত ডাবের পানি খেলে বাচ্চা সুন্দর
ও চোখ কয়রা হয়
ডিম: একটি ডিম সারাদিন প্রোটিন শক্তি জোগায়। ডিম খাওয়া ফলে শরীরে শক্তি
বৃদ্ধি পায়। গর্ভবস্থায় ডিম খাওয়া ভালো তবে এটি দিয়ে বাচ্চা রং উজ্জ্বল হয়না
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
গর্ভবতী মায়েদের জীবনে সুন্দর সময় গুলোর মধ্যে অন্যতম সময় হলো মাতৃত্ব কাল। এই
সময়ে গর্ভবতী মায়েরা গর্ভের সন্তান জন্য খুবই দুশ্চিন্তায় থাকেন। কারন এই সময় কি
খেলে ভালো হবে সন্তানের জন্য উপকারী হবে। এই সময় অনেক কিছু খাইতে ইচ্ছে করে।
অনেকেই আবার মুড়ি খুব পছন্দ করেন।
কিন্তু আসলে কি মুড়ি খাওয়া যাবে কিনা এই সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত যেনে নিব।আজকে
আমরা গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের
সকলের ভালো লাগবে। মুড়ি আমাদের দেশের গ্রাম ও শহরে মানুষদের কাছে অনেক পরিচিতি
একটি খাবার। মুড়ি আমরা বিভিন্ন সময় মুখরোচক ও আড্ডা দেওয়ার মাঝে খেয়ে থাকি।
আমরা হইতো অনেকে জানি না অতি সাধারন এই খাবার কত উপকারিতা রয়েছে । ব্যাপার না
আমরা এখনি যেনে নিব গর্ভবতায় মুড়ি খাওয়ার খেলে কি হই মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা কি
গর্ভবতী মায়েদের মুড়ি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আপনার যদি গর্ভবতী অবস্থায় মুড়ি
খেতে ইচ্ছে করে তাহলে নিশ্চিতে খাইতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা জেনে নিন
গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায় সেই পরিবর্তন সময়
শরীরের না পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হয়। যাতে শরীরের না সম্যসার দেখা যায়। তাই মুড়ির
মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম প্রোটিন আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপদান থাকে। যা শরীরের
ঘাটতি পূরণ করতে এবং শিশু কে সুস্থ রাখে। মুড়ির মধ্যে এসিড এর পরমাণ কম থাকায়
মুড়ি খেলে গ্যাস সমস্যা অনেক কম হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে
এছাড়াও শরীরে রোগ জীবাণু আক্রমণ করতে কম পারে। গর্ভবতী মা ও শিশু সুস্থ থাকে। তবে
হা যেকোন জিনিস বেশি খাওয়া ভালো না। এতে হজম হতে সময় নেয়। তাই গর্ভবতী মায়েদের
শুকনো মুড়ির থেকে ভেজানো মুড়ি চিনি, নারকেল দিয়ে খেতে পারেন। তাহলে হজম ভালো হবে
খিদা বেশি বেশি লাগবে।
গর্ভবস্থায় প্রথম তিন মাসে খাবার তালিকা
প্রতিটা মেয়ে বিয়ে পর মা হবার স্বপ্ন দেখে। মা হবার সংবাদ পাওয়া পর প্রতিটা
পরিবারে তৈরি হয় উত্তেজনা তাদের অনাগত সদস্য জন্য কি ভালো হবে কি খারাপ হবে কি
খাওয়াতে হবে এসব নিয়ে তৈরি হয় আনন্দঘন পরিবেশ। এই আনন্দ মাকে নিয়ে তৈরি হয় নানা
ধারণা।
প্রথম তিন মাস কোন খাবার দেওয়া প্রয়োজন কি খাবার বাচ্চা জন্য ভালো হবে কোনটা
দেওয়া ঠিক হবে না এসব নিয়ে গর্ভবস্থায় তৈরি হয় নানা কৌতুহল। এই কৌতুহল দূরকরণে
জন্য চলুন জেনে আসি কি খাবার দিতে হবে একজন গর্ভবতীকে। গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের
খাবার তালিকা রাখতে হবে।
- প্রতিদিনের খাবার তালিকা ১টা ডিম অবশ্যয় রাখতে হবে। ডিম থাকে প্রোটিন যা সারাদিন কাজ করার শক্তি জোগায়।
- প্রতিদিন ১ গ্লাস দুধ তার তালিকা রাখতে হবে। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম গর্ভবতী মায়ের শরীরে দূর্লবতা দূর করতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন- সি সমৃদ্ধ খাবার তার তালিকায় রাখতে হবে কারণ বাচ্চা বেড়ে উঠতে ও রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে ভিটামিন- সি।
- আয়রন ও ফলিক এসিড যেসকল খাবার থেকে পাওয়া যায় সেসকল খাবার গর্ভবতী মায়ের তালিকায় রাখতে হবে।
- তরল খাদ্য একজন গর্ভবতী নারী জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রতিদিন ১/২ লিটার পানি পান করুন। পানি সবচেয়ে বেশি দরকার এসময় নাহলে বাচ্চা পানি শূন্য হয়ে যায় তাই প্রতিদিন পানি ও তরল খাদ্য তালিকা যুক্ত রাখতে হবে।
- ভিটামিন- ডি ও ভিটামিন-এ খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। বাচ্চা জন্য ভিটামিন-এ খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন- ডি মা গ্রহণ করলে বাচ্চার জন্ডিস হয়না।
- স্টার্চ জাতীয় খাবার গর্ভবতীর খাদ্য তালিকা রাখতে হবে। গম, যব, চাল এসব খাদ্যতে প্রচুর পরিমাণ স্টার্চ রয়েছে।
- সবুজ শাক সবজি আর লাল শাক সবজি খাবার তালিকায় রাখতে হবে। শাক সবজি থেকে পাওয়া ভিটামিন শরীরে নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা প্রদান করে।
গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না
- আনারস একজন গর্ভবতী মায়ের খাওয়া নিষেধ।
- কাঁচা পাকা পেঁপে খাওয়া যাবেনা।
- ক্যাফেইন বা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- কাঁচা ডিম বা মাংস আধা সিদ্ধ এসব খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- অধিক চিনিযুক্ত খাবার যেমন মাখন, পেস্ট্রি এসব খাদ্য খাওয়া যাবেনা।
- বেকারি খাদ্য খাওয়া যাবেনা এটা শরীরে ক্ষতি করে ডালডা যা অতিরিক্ত তেল থাকে।
- কোমল পানীয় পরিহার করতে হবে এটি শরীর নানা সমস্যা সৃষ্টি করে।
- অতিরিক্ত তেল দেওয়া খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাজাপোড়া খাওয়া যাবেনা এতে গ্যাসের সমস্যা বেশি হয়। এমনি গর্ভবস্থায় গ্যাস বুক জ্বালা পোড়া করে এজন্য ভাজাপোড়া পরিহার করতে হবে।
- কলিজা বা সমুদ্রিক মাছ এসব থাকা লবণ শরীরে ক্ষতি করে তাই এসব খাওয়া যাবেনা।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা অবশ্যয় সুষম খাদ্য রাখতে হবে। প্রতিদিন তালিকা করে
খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণ পানি বা তরল খাদ্য খেতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি
যেন না হয়। আবার অনেক মায়ের রক্তস্বল্পতা হয় হিমোগ্লোবিন কম থাকায় সমস্যা হয় তাই
ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফলিক এসিড, ভিটামিন-এ ভিটামিন -বি১২, ওমেগা-৩ ইত্যাদি সুষম
খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে।
গর্ভবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ
ঘরে ভারী কোন আসবাবপত্র চেড়ে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ভারী জিনিস চাড়লে
পেটে চাপ লাগতে পারে এতে বাচ্চার ক্ষতি হবে। হালকা যেসকল জিনিস সেটা আনা নেওয়া
করতে পারে।
নিচে বসে ভারী পানির বালতি এনে ঘর মোছা যাবেন এতে পেটে চাপ পড়বে। লাঠি দিয়ে ঘর
মুছতে পারে সমস্যা নাই। তবে বাথরুম পরিষ্কার করার সময় এসিড জাতীয় পদার্থ ব্যবহার
করা যাবেনা। এসিডের যে ঝাজ লাগে সেটা মা ও বাচ্চা জন্য ক্ষতি করে।
- কালি বাসন অনেক চাপ দিয়ে বসে মাজা যাবে না। পেট চাপ লাগবে এমন কোন কাজই করা উচিত নয়। এসময় একটু সাবধানে চলতে হবে।
- শাক সবজি বসে কাটতে পারবে তবে অনেক সময় ধরে চাপ দিয়ে বসে থাকা যাবেনা। অল্প সময় দাঁড়িয়ে কাটাকুটি করায় ভালো।
- বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে কাজ করা যাবেনা ২০ থেকে ২৫ মিনিট মধ্যে বসতে হবে। এর বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকা উচিত নয়।
- বাড়িতে উঁচুতে উঠে কোন কাজ করা যাবেনা। ফ্যান মুছা বা ঘরের পর্দা পরিষ্কার করা পরিবর্তন করা এসব কাজ না করায় ভালো।
একজন মাকে সব সময় গর্ভবস্থায় নিজের যত্ন নিতে হবে। এই সময় গর্ভবতী মায়ের
প্রতিদিনের খাবার তালিকা করতে হবে। এমন কোন কাজ করা যাবেনা যা নিজের বা বাচ্চার
ক্ষতি হয়। সব সময় নিজেকে হালকা কাজ করতে হবে। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাটতে হবে সব
সময় সুয়ে বসে থাকা যাবেনা এতে শরীর আরো ভারী হয়ে যায়।
৬মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
৬মাসের গর্ভবতী মায়ের জন্য খাবার তালিকায় যে সকল খাবার, এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার
বিশেষ ভাবে প্রয়োজন সেইগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো। গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার
তালিকা করতে হবে।
ঘুম থেকে উঠার পরঃ জলে লেবুর রস, মধু মিশিয়ে/আদা চা/ জিরে চা/ দুধ ছাড়া
চা/ বিস্কুট
জলখাবারঃ সিদ্ধ ডিম, ওটস,সবজি বা টমটের স্যুপ, রুটি ভাজি, পাউরুটি, কলা।
হাল্কা টিফিনঃ যেকোন ধরণের ফল, ফলের জুস , এক গ্লাস দুধ, মুড়ি অঙ্কূরিত
মুগ বা ছোলা।
দুপুরের খাবারঃ ভাত, রুটি, মাঝারি ঘন ডাউল, শাক, সবজি, মাংস, মাছ, দই বা
শসার ভর্তা।
বিকেলের টিফিনঃ চা বিস্কুট, চিড়ে ভাজা, বাটারমিল্ক, ভাজা বা মুড়ি
মাখা,শশা,ড্রাই ফ্রূটস,পাউরুটি, কলা,
রাতের খাবারঃ ভাত রুটি ইচ্ছে মতো সবজি, ডাল, চিকেন স্যুপ, স্যালাড
লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি
আমাদের সকলের উচিত একটি মেয়ে যখন মা হতে যায় তখন তার দিকে বেশি বেশি খেয়াল রাখতে
এবং যত্ন করতে এবং গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা ও গর্ভাবস্থায় মুড়ি
খেলে কি হয় তা সম্পর্কে জানলেন। আসলে একজন গর্ভবতী মা বুঝে তার কষ্ট। তাই গর্ভবতী
মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা কি কি খাবার রাখতে হবে এবং প্রতিদিনের খাবার
তালিকায় বিশেষ প্রয়োজন কেননা গর্ভবতী মা যখন ভালো খাবার খাবে তাই পেটে থাকা
সন্তান তাই গ্রহন করবে।
তাই আমাদের সকলের উচিত নিজেদের পরিবারের গর্ভবতী মায়ের প্রতি সবসময় খেয়াল রাখা।
যদি আমার এই পোস্ট পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই পেজটি ভিজিট করে রাখুন। সবাই ভালো
থাকবেন।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url